মোরগ-মুরগি গোটা বিশ্বে এমনিতেই ছড়িয়ে যায়নি। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মানস সভ্যতা এগিয়ে যাওয়ার পেছনে কিছু ভূমিকা এই গৃহপালিত পাখিটিও রয়েছে। আর এ কারণেই পৃথিবীর নানা প্রান্তের বহু জনগোষ্ঠীর মাঝে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে এবং দৈনন্দিন জীবনে মিশে গিয়েছে এই প্রাণীটি। গৃহপালিত প্রাণীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় এই পাখিটি।
মুরগি বহু প্রাচীনকাল থেকেই পৃথিবীর নানা অংশে জনপ্রিয় ছিল। মানুষকে এগিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছে এটি। কারণটি হলো, এটি যুগ যুগ ধরে মানুষকে পুষ্টিকর মাংস ও ডিম দিয়ে আসছে। তাই এটি কুকুর, বিড়াল বা গরু-ছাগলের চেয়ে বেশি উপকারী প্রাণী বলে গণ্য হয়ে আসছে।
প্রাচীন ব্যাবিলনেও ৮০০ বিসি-তে মুরগির অবয়ব পাথরে আঁকা হয়েছে। অনেকে নাকি উপকারী প্রাণী হিসেবে এর পূজাও করতো।
পশ্চিমা দেশগুলোতে আফ্রিকা থেকে বহু মানুষদের আনা হতো যাদের মুরগি পালন সম্পর্কে জ্ঞান রয়েছে। তাদের মুরগি পালনের জন্যেই আনা হতো। তবে এখানে অনেকেই বাড়িতে মুরগি পালন পছন্দ করতেন না। ঘরবাড়ি নোংরা করা এবং ভোরে মোরগের ডাকে অনেকে বিরক্ত হতেন। ধীরে ধীরে এটি ফার্মের মাঝে চলে গেছে।
পশ্চিম আফ্রিকাতে ফসলের পোকামাকড় মারার একমাত্র উপায় ছিল মুরগি। এদের ছাড়া ফসল তোলা ছিল প্রায় অসম্ভব। তারা শুকর, ছাগল বা গরুর চেয়ে প্রয়োজনীয় মনে করতো মুরগিকে।
তবে ফ্লু-বিষয়ক একটি সমস্যা প্রায় বিপদে ফেলে দেয় মানবজাতিকে। তবে তা মুরগির ভেতরেই থাকে। আবার রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপে এই ফ্লুয়ের ভাইরাস নষ্ট হয়ে যায়।
পৃথিবীর কোনো বিশেষ স্থানে নয়, যেকোনো স্থানে মুরগির মতো পাখি সব সময় অতি প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ এক গৃহপালিত প্রাণী। তাই শুধু খাবারের আইটেম বা উপকারী প্রাণী হিসেবে নয়, অনেক গোত্রে বিশেষ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেরও সঙ্গী হয়ে উঠেছে।