ঢাকা: দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই কমবেশি র্যাগিং আছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, সরকারের একক প্রচেষ্টায় র্যাগিং বন্ধ করা সম্ভব না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, পরিবার—সবার ভূমিকা রয়েছে। র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈশ্বিক শিক্ষা পরিবীক্ষণ (জিইএম) প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘অভিবাসন, বাস্তুচ্যুতি এবং শিক্ষা: দেয়াল নয়, প্রয়োজন সেতুবন্ধন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ, লজ্জিত। একজন মেধাবীর এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড মেনে নেওয়া যায় না। হত্যায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম এসেছে, তাদের দ্রুত ধরা হয়েছে। অবশ্যই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।’
বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি—শিক্ষার্থীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকেরা শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বুয়েটে ছাত্রলীগসহ অন্য ছাত্রসংগঠনগুলোও শক্তিশালী। শুধু সরকারসংশ্লিষ্ট বলে ছাত্রলীগ এমন করছে, সেটি বলাও গ্রহণযোগ্য না। যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগিং বন্ধে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।
বুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন—এ বিষয়ে সরকারের ভাবনা কী, তা জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একজন উপাচার্য থাকবেন কি না, তাঁকে অপসারণ করা হবে কি না, সেটি ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু যাঁরা এখন আন্দোলন করছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন এমন অন্যায় মেনে নিয়েছেন এবং চলতে দিয়েছেন। অন্যায় প্রতিরোধে নৈতিকতার জায়গা থেকে তাঁরা কী করেছেন। শিক্ষকেরা আগে সরব হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা হয়তো প্রতিরোধ করা যেত।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জি এম হাসিবুল আলম, ঢাকাস্থ ইউনেসকোর প্রধান বিয়াট্রিস কালদুন, বাংলাদেশ ইউনেসকো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল মনজুর হোসেন প্রমুখ।