আগামী মাসের ২৪ তারিখে তাঁর অস্ট্রেলিয়াগামী উড়ালে চেপে বসাটা নিশ্চিত ছিল। তাতে অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলে কালই রওনা দিলেন ওই দেশে। হাঁটুর ইনজুরির চিকিৎসা করাতে অস্ট্রেলিয়া গেলেন তামিম ইকবাল। জানুয়ারিতে সতীর্থদের সঙ্গে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অংশ হওয়ার ব্যাপারে আশার প্রত্যয়ও গেলেন শুনিয়ে।
‘অবশ্যই আমি অনেক ইতিবাচক আছি। ২৯ তারিখ চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা হবে। উনি হাঁটু দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন, অপারেশন করতে হবে নাকি অন্য কিছু করবেন। আসলে একটু তো ভয় লাগছেই, যেহেতু বিশ্বকাপ সামনে। তার পরও ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করছি। ইতিবাচক থাকলে ইতিবাচক ফল আসবে বলে আশা করছি’- কাল সন্ধ্যায় নিজ বাসায় সাংবাদিকদের বলেছেন তামিম। বাঁ হাঁটুর ইনজুরি যাঁর বিশ্বকাপ খেলার আকাশে ফেলেছে মেঘের ছায়া। দেশে এমআরআই করানোর পর সে রিপোর্ট পাঠানো হয় মেলবোর্নে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডেভিড ইয়াংয়ের কাছে। তাঁর পরামর্শে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গেলেন তামিম।
এই ওপেনার বিশ্বকাপ খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার চিকিৎসকের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন, ‘আমি যখন দৌড়াই, তখন পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। এ অবস্থায় বিশ্বকাপে এমনিতেও খুব ভালোভাবে খেলতে পারব না। আমি পুরো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার ছেড়ে দিয়েছি চিকিৎসকের ওপর। উনি অপারেশন করাতে বললে, করাব। নইলে অন্য কোনোভাবে যদি এর চিকিৎসার পরামর্শ দেন, সেটিই করাব।’ ২৯ ডিসেম্বর ও ৩ জানুয়ারি ইয়াংয়ের অ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়া আছে। অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হলে সেটি ২৯ ডিসেম্বর রাতেও হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তামিম।
খুব জটিল অস্ত্রোপচার এটি না। তবে জটিলতা তৈরি হয়েছে বিশ্বকাপেরও খুব বাকি নেই বলে। ১৫ ফেব্রুয়ারি টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে। সেই হিসাবে অপারেশন করাতে হলে সেরে ওঠার জন্য ছয় সপ্তাহের মতো সময় পাবেন তামিম। তবে এই ব্যাপারটিও ছেড়ে দিয়েছেন তিনি চিকিৎসকের ওপর, ‘ডাক্তার আগে আমাকে দেখুক। উনার মুখ থেকেই শুনি কিভাবে কী করতে হবে। এমন অপারেশনের পর সেরে উঠতে তিন, চার, পাঁচ সপ্তাহও লাগে বলে শুনেছি। আশা করি, দুই-তিন সপ্তাহই হোক- তাহলে প্রস্তুতির জন্য বেশি সময় পাব।’
ইনজুরির কারণে প্রায়ই সংবাদ শিরোনামে আসছেন তামিম। তাতে নিজের হতাশা জানালেও তাতে নিজের দায় দেখছেন না এই ওপেনার, ‘আসলে এমন এমন ইনজুরি হচ্ছে যে আমার কিছু করার নেই। যদি ফিটনেসের সঙ্গে সম্পর্কিত হতো, তাহলেও না হয় বুঝতাম। এখন হাত ভেঙে গেলে এর সঙ্গে আমার ফিটনেসের সম্পর্ক কী। এটিও ক্রিকেটের অংশ, খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে পড়ে আবার ঠিক হয়। আমার জন্য হতাশার হচ্ছে, গত এক-দেড় বছরে এমন বেশ কিছু ইনজুরি হয়েছে।’ ইনজুরি সারিয়ে খেলতে পারলে বিশ্বকাপে দেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন তামিম। আর এবার মেলবোর্ন শহরে গিয়ে ওখানকার স্টেডিয়ামে খেলা দেখবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে অসহায় হাসিতে খানিকটা কৌতুকও করলেন তিনি, ‘আগে আমার মেলবোর্ন স্টেডিয়াম ঠিক করে নিই, এরপর খেলা দেখব।’
তামিমের সেই ‘মেলবোর্ন স্টেডিয়াম’ অর্থাৎ হাঁটুর ঠিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে গোটা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাই।