বরিশাল: হিজলা উপজেলার আজম বেপারী (২৫) নামে এক যুবককে হাট-পা বেঁধে নির্যাতনের পর মূত্র খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) সেই মলমূত্র খাওয়ানোর ওই দৃশ্যটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করে। এ ঘটনার পর লোকলজ্জায় আজম বেপারী এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে যান। হিজলা উপজেলার হরিণাথপুর ইউনিয়নের তালতলা জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার আজম বেপারী হরিণাথপুর বাজার সংলগ্ন এলাকার মহিউদ্দিন বেপারীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, জহির ও আজম বেপারী দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে ব্যবসা করে আসছিলেন। প্রথমদিকে তারা জ্বালানি তেল কিনে বিক্রি করতেন হরিণাথপুর লঞ্চঘাটে। এরপর তারা জমির ব্যবসা শুরু করেন। জমি ব্যবসায় তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকা লাভ হয়। তবে আজম ব্যবসায়িক সমান অংশীদার হলেও জহির ওই টাকা একাই আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আজম ব্যবসার লাভের অংশ চাইলে জহির তাকে টাকা দেবে না বলে হুমকি দেন। কিছুদিন আগে আজমকে মারধর করে এলাকা ছাড়া করেন জহির।
সম্প্রতি আজম এলাকায় ফিরে এসে পুনরায় ব্যবসার লাভের টাকা দাবি করেন জহিরের কাছে। জহির এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজমকে মারধর ও অপমান করতে হরিণাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মাহবুব সিকদার ও ইয়নিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদলকে টাকা দিয়ে ভাড়া করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর আজমকে বাড়ি থেকে ডেকে তালতলা জামে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় নিয়ে যান মাহবুব সিকদার। সেখানে আগে থেকেই মাহবুব সিকদারের সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে আজমের হাত-পা বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন তারা। এরপর আজমের হাত-পা চেপে ধরে মাহবুব সিকদারের সহযোগীরা।
এ সময় মাহবুব সিকদার একটি বদনাভর্তি মলমূত্র আজমের মুখে ঢেলে তা খাওয়ান। আর মল-মূত্র খাওয়ানোর ওই দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করেন মাহবুব সিকদারের চাচাতো ভাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদল। পরে আজমকে সেখানে ফেলে রেখে চলে যান তারা।
মাহবুব সিকদারের নেতৃত্বে টুমচর এলাকার রশিদ মাতুব্বর, মো. সোলায়মানসহ ৮ জন ব্যক্তি নির্যাতন ও মল-মূত্র খাওয়ানোর কাজে অংশ নেন বলে স্থানীয়রা ভিডিওটি দেখে নিশ্চিত করেছেন। আর মল-মূত্র খাওয়ানোর ওই দৃশ্য মাহবুব সিকদারের চাচাতো ভাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহারিয়ার বাদল ভিডিওটি ধারণ করেছেন বলেও তারা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অসিম কুমার শিকদার বলেন, বিষয়টি আমরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে রাতে জেনেছি, ভিডিওটি দেখেছি। এ ব্যাপারে নির্যাতিতার পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তদন্ত করে এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।