ফেনী: ফেনী হয়ে ভারতে পালানোর পরিকল্পনা ছিল ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের। এ জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। আর এক দিন মাত্র সময় পেলে তিনি ফেনীর বিলোনিয়া এলাকা দিয়ে ভারতে পাড়ি জমাতেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
রোববার রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ওই গ্রামকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছিলেন।
সম্রাটের গ্রামের বাড়ি পরশুরাম থানার মীর্জানগর ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে। সূত্র জানায়, গ্রামটি ভারত সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে। গ্রামে সম্রাটের বাড়িটি সারা বছর খালি পড়ে থাকে। গ্রেফতারের আগে হঠাৎ করে সম্রাটের বাড়িটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বাড়িতে কিছু যুবকের আনাগোনাও দেখা গেছে। এরা মূলত পাহারার কাজ করেছিল। চৌদ্দগ্রামের যে বাড়িতে সম্রাট আত্মগোপনে ছিলেন সেই গ্রামও ভারত সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে। তবে ওই সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া থাকায় সীমান্ত অতিক্রম করা দুরূহ ছিল। এ অবস্থায় পরশুরামের বিলোনিয়া সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এ জন্য সীমান্তের পাচারকারী একটি চক্রকে পারাপারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের মুখে তা ব্যর্থ হয়।
পরশুরামের স্থানীয় লোকজন জানায়, সম্রাট এলাকায় যুবলীগের একটি অংশকে পুষতেন। রোববার সকালে সম্রাটের গ্রেফতারের খবর এলে তার সমর্থকরা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হতে থাকে। পরশুরামের মীর্জানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জমান ভুট্টো জানান, এলাকায় সম্রাটের সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে। ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ সকাল থেকে সম্রাটের পক্ষে তৎপর ছিল। তবে যুবলীগ থেকে সম্রাটকে বহিষ্কার করার ঘোষণা এলে তারা সটকে পড়ে।
সম্রাট পরশুরামের একটি প্রাইমারি স্কুল ও পরে পরশুরাম মডেল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করার পর ঢাকায় চলে যান। এরপর তিনি ঢাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ছাত্রজীবনে এলাকায় ঘন ঘন যাতায়াত থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে সীমিত সময়ের জন্য ফেনী আসতেন তিনি। ফেনীর একটি দুষ্টচক্রের সঙ্গে তার সখ্য ছিল বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান।