হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ৮৫ বছর আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর আজও লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ১৮টি ট্রেন।
লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার সংযোগ রক্ষাকারী এ সেতুর কাঠের স্লিপারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। নর্দার্ন বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১৮৩৪ সালে ২ হাজার ১১০ ফুট দৈর্ঘ্যর তিস্তা রেল সেতুটি নির্মাণ করে।
এটির মেয়াদ ওই সময় দিয়েছিল ১শ বছর। বর্তমানে রেল সেতুটির বয়স ১শ ৮৫ বছর। অর্থাৎ মেয়াদের প্রায় দ্বিগুণ সময় পেরিয়ে গেছে সেতুটি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রেলসেতু ও কালভার্টগুলোর অর্ধশত বছরের পুরনো কাঠের স্লিপারের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। রেল লাইনের ক্লিপ চুরি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে রেলপথটি।
বিশেষ করে তিস্তা রেলসেতুর কাঠের স্লিপারগুলো পচে গেছে। স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর জন্য দুটি পিন দেওয়ার কথা থাকলেও রয়েছে তা একটি করে। কোনো কোনো স্থানে একদম স্লিপারে লোহার প্লেট নেই।
এ ছাড়া সেতুর পাশে দুই লাইনের জোড়ায় ফিসপ্লেটে চারটি নাট-বল্টু থাকার কথা থাকলেও আছে তিনটি করে। দিনের পর দিন এভাবে ট্রেন চলাচল করলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের এসব নজরে আসছেন না।
মেয়াদোত্তীর্ণ তিস্তা রেল সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে, স্বীকার করেছে রেলওয়ে বিভাগ। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে সড়ক ও রেলপথের সব সেতু বা কালভাটের অবকাঠামো জরিপের নির্দেশ দিলেও তার কোনো কার্যক্রম এ জেলায় চোখে পড়ছে না।
অবশ্য রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সম্প্রতি জানিয়েছেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে নতুন আরেকটি ট্রেন সংযোগ হলেই ঝুঁকিপূর্ণ লালমনিরহাট রেলসেতুর পাশে আরও একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
তিস্তা রেলসেতু এলাকার স্থানীয়রা জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এই তিস্তা রেলসেতুটি যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধারণের দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আগে সেতুটি মেরামত করা প্রয়োজন।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার মুহাম্মদ শফিকুর রহমান জানান, গত ২৫ জুন এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিভাগের ছোট-বড় ৪০৮টি সেতু নির্মাণের অনুমোদন পাওয়া গেছে।
তবে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও তিস্তা রেলসেতু ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তার পরও তিস্তা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে নতুন করে আরও একটি ডাবল ব্রডগেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে রয়েছে