ঢাকা:অর্থনীতিবিদ ড.আনু মুহাম্মদ বলেছেন, বর্তমানে যে অভিযান চলছে এটিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান বলা যাবে না। এই অভিযান হচ্ছে ক্যাসিনো কেন্দ্রিক কিছু তৎপরতা। ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে পুলিশ ও র্যাবের অভিযান। এ অভিযান কতদূর যাবে সেটাও বলা মুশকিল। এ ধরনের অভিযান আমরা আগেও দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়।
যে কোন নতুন সরকার ক্ষমতায় এলে বা যখন কোন সরকার ভাবমূর্তি সংকটের মধ্যে পড়ে বা সরকারের নিজেদের লোকদের মধ্যে সমস্যা তৈরি হলে এ ধরনের অভিযান চালানো হয়। কিন্তু এ ধরনের অভিযান বেশিদিন চলে না। যেই পুলিশ ও র্যাবের তত্ত্বাবধানে এইসব ক্যাসিনো চলছিল তারাই আবার এখন অভিযান চালাচ্ছে। এর পেছনে কি ঘটনা সেটা তো আর আমরা বলতে পারব না। এ অভিযানকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, এভাবে বলা যাবেনা।
দুর্নীতি অনেক বড় বিষয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান হতে হলে সরকারের সকল চুক্তি প্রকাশ করতে হবে। এসব চুক্তিতে যে অনিয়ম হচ্ছে সেসব খতিয়ে দেখতে হবে। যতরকম নির্মাণ কাজ আছে এসব কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যে অনিয়ম আছে তা খুঁজে বের করতে হবে। দেশের সর্বত্র দুর্নীতি ছড়িয়ে গেছে।
সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় বড় পদে এবং পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের উপার্চায পদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে তা অনিয়মের মাধ্যমে। সরকার সমর্থকদের মধ্যেও এদের চেয়ে যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, উপার্চাযসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে সরকার তাদেরকে পছন্দ যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। যারা বিভিন্ন অনিয়ম সন্ত্রাস এসবের সঙ্গে যুক্ত থাকে। কিন্তু তাদের একমাত্র যোগ্যতা হচ্ছে তারা সরকারের অনুগত। সরকার যা বলে তারা তাই করে। এইসব বড় বড় পদে যদি দুর্নীতিবাজরা থাকে, তারা নিজেরা তো দুর্নীতি করে অন্যদের দুর্নীতি ঠেকানোর ক্ষমতা থাকে না। তার ফলে পুরো প্রক্রিয়াটাই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। মূল কারণটা হচ্ছে ওপরে। ওপর থেকে দুর্নীতি নিচে ছড়িয়ে পড়ে। ওপরের দুর্নীতি যদি বন্ধ হয় তাহলে নিচের দুর্নীতি অব্যহত রাখার কোন সুযোগ থাকে না। এটা সরকারের সকল প্রতিষ্ঠান, সকল মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রযোজ্য হওয়া দরকার।