ডেস্ক: ঐতিহাসিক রায়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে বৃটিশ সুপ্রিম কোর্ট। পার্লামেন্ট স্থগিত করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জনসন তার সেই সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে বলা হয়েছে ব্রেক্সিট সম্পাদনের সময়সীমা ফুরিয়ে আসার পার্লামেন্ট স্থগিত রাখা অন্যায়। সুপ্রিম কোর্টের ১১ জন বিচারক দুটি আপিলের ওপর শুনানি করেন গত সপ্তাহে। এরপর সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বেঞ্চের সভাপতি বিচারপতি লেডি হ্যালি। এতে বলা হয় পার্লামেন্ট স্থগিতাদেশ বাতিল হয়ে গেছে। ফলে পার্লামেন্ট আর স্থগিত থাকতে পারে না। ফলে অনতিবিলম্বে হাউজ অব কমন্সের অধিবেশন ডাকতেই হবে বলে জানিয়েছেন হাউজ অব কমন্সের স্পিকার জন বারকাউ। এ ঘোষণা দেয়ার পরপরই বৃটিশ রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন এক অধ্যায়।
তুমুল স্বস্তি দেখা দিয়েছে বরিস জনসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া রাজনীতিকদের মধ্যে। সুপ্রিম কোর্টের এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন জন বারকাউ। তিনি বলেছেন, সরকারের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন বিচারকরা। পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে তাই অবিলম্বে হাউজ অব কমন্সের অধিবেশন ডাকা উচিত। তাই অবস্থার গুরুত্ব বিবেচনা করে আমি দলীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করবো । ওদিকে রায় শুনে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ইংলিশ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলকারী ব্যবসায়ী জিনা মিলার। তিনি বলেছেন, বুধবারই প্রধানমন্ত্রীকে পার্লামেন্টের দরজা খুলে দিতে হবে। এমপিদেরকে ফিরতে হবে পার্লামেন্টে এবং সাহসী হতে হবে। এই বিবেকবর্জিত সরকারকে জবাবদিহিতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে।
ওদিকে বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী পদে যোগ্য নন বলে দাবি করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেট নেতা জো সুইনসন। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জনসন পার্লামেন্ট স্থগিত করার আগে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও দেশকে ভুলপথে পরিচালিত করেছেন। এ থেকে আমরা এরই মধ্যে নিশ্চিত যে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য নন বরিস জনসন। তিনি বেআইনিভাবে জনগণের প্রতিনিধিদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিয়েছেন। আমি হাউজ অব কমন্সে আমার দায়িত্ব পালন শুরু করতে যাচ্ছি।
একই সঙ্গে সবাইকে নিয়ে ব্রেক্সিট বন্ধের জন্য কাজ করবো। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রশংসা করেছেন ব্রেক্সিট বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। তিনি বলেছেন, আদালত থেকে শক্তিশালী রায় এটাই প্রমাণ করে যে, আইনের কোনো তোয়াক্কাই করেন না বরিস জনসন। শিগগিরই আমরা কাজ শুরু করে চ্যালেঞ্জ করবো এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য তাকে পরাজিত করবো। রায়কে সত্যিকার ঐতিহাসিক রায় বলে আখ্যায়িত করে টুইট করেছেন স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির নেত্রী ও স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজেন।