গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিনের অপসারণ দাবিতে আজ শুক্রবার ছুটির দিনেও আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ঘরে ফিরবেন না।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের স্লোগানে আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মুখর। স্লোগানে স্লোগানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁদের এক দফা, এক দাবি—ভিসির অপসারণ।
উপাচার্যের পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে গত বুধবার রাত থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীদের আগের ১৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অনড় থাকেন। তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ চান।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনের ডাক দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ ছুটির দিনেও তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকালের তুলনায় আজ দ্বিগুণ শিক্ষার্থী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘এই ভিসি (খোন্দকার নাসির উদ্দিন) ১৯৯২ সালে ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দল থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। সেখানে তিনি পরাজিত হন। একজন বিএনপিপন্থী ভিসি কখনো বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ও বঙ্গবন্ধুর ভূমিতে থাকতে পারেন না। আমাদের একটাই দাবি, ভিসিকে অপসারণ করতে হবে।’
ফেসবুকে মন্তব্যের জেরে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া নামের এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। বুধবার রাতে ওই ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের ১৪ দফা দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
গতকাল দিনভর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পর সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন কয়েক শ শিক্ষার্থী। এই কর্মসূচি এখনো চলছে।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে গতকাল ক্যাম্পাসে ক্লাস, পরীক্ষাসহ কোনো একাডেমিক কার্যক্রম চলেনি। এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আন্দোলনরত অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্যকে দ্রুত অপসারণ করা না হলে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। তাই আমাদের একটাই দাবি, ভিসিকে অপসারণ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা হোক।’