মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন (উত্তরা) প্রতিনিধিঃ আসামিকে ছেড়ে দিয়ে তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা নিজেদের মধ্যে বন্টন করার অভিযোগে গ্রেফতার ৫ পুলিশ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছেন উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হওয়া মামলায় সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার পুলিশ পরিদর্শক পরিতোষ চন্দ্র। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম কনক বড়ুয়া তিন জনের তিনদিন ও দুই জনের দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে নেয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন-গ্রেফতারদের মধ্যে গুলশান থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ আহমেদ মিয়াজি (৪৪), এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল (২৩) ও নায়েক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের (২৭) তিনদিন এবং এপিবিএনের কনস্টেবল মোঃ রনি মোল্ল্যা (২১) ও কনস্টেবল মোঃ শরিফুল ইসলাম (২৩) এর দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
অভিযানে অংশ নেয়া পুলিশ কর্মকর্তা ও মামলার বাদী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-১ এর এসআই মোঃ আবু জাফর আজ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার বিকালে তাদের আটক করে রাতেই তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দফতরের ব্যারাক ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়াবার ভাগবাটোয়ারা করছেন এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সে বাথরুমে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আবু জাফর। অভিযানে বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, কনস্টেবল রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পান তারা।
তাদের বিস্তারিত পরিচয় নেয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে। তার পরনে থাকা ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযান চালানো হয় মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে আরও ৩৯৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শরিফুলের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করা হয়। শরীফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে জানায়, সে রনি মোল্ল্যার কাছ থেকে ১৮৫০০ টাকায় ১৫০ পিস ইয়াবা কিনেছে। এরপর গ্রেফতার করা হয় রনিকে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করে এপিবিএনের সদস্যরা। তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার সঙ্গে থাকা ২০০ পিস ইয়াবা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখে। বাকি ১৫০ পিস নেয় জাহাঙ্গীর আলম।
এ বিষয়ে উত্তরা পূর্ব থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে যাহার নং-১৭, তারিখঃ ১৫/০৯/২০১৯ ইং