নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে যুবদল নেতার সাজানো ছিনতাইয়ের ঘটনায় চার নিরপরাদ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এরপর স্থানীয়দের চাপে প্রায় ১২ ঘন্টার পরে তাদের পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ছেড়ে দেয়া হয় ।
জানা যায়, তেলিহাটি ইউনিয়ন যুবদলের নেতা মো.তোফাজ্জল সরকার তার মোটরসাইকেল ছিনতাই হয়েছে বলে মাওনা পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে উপজেলার ধনুয়া গ্রামের মো.শুকুর আলীর ছেলে মো.সুমন মিয়া, একই গ্রামের মো.হোসেন আলীর ছেলে আজগর আলী, মো.লাভলু মিয়া ও মো.ফাইজুদ্দিন চার চার যুবককে আটক করায়। এর আগেই পুকুর থেকে মোটরসাইকেলটি উদ্ধার হয়। তবে আটকৃতদের পরিবারের ভিন্ন কথা বলছেন, যুবদল নেতা ধনুয়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া এক মেয়ের সাথে রাতে ধনুয়া পাথারের পুকুর পাড়ে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলার সময় এলাকার লোকজনদের তাদেরকে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে চলে যায়। তার গোপন সম্পর্কের কথা এলাকার কয়েকজন যুবক জেনে ফেলায় ও এই অপকর্ম ডাকতেই এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের আটক করায়।
গতকাল দুপুরে সোমবার শ্রীপুর মডেল থানার মাওনা পুলিশ ফাঁড়ি থেকে আটক যুবকদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাদের সবাইকে বাড়ি থেকে গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে যুবদল নেতার অভিযোগে মাওনা পুলিশ ফাড়ির এএসআই মোসাব্বিরের নেতৃত্বে কিছু পুলিশ সদস্যরা আটক করে।
আটককৃতদের মধ্যে আজগর আলীর পিতা মো.হোসেন আলী বলেন, রাতে পুলিশ দরজায় আচমকা লাগাতার লাথি মারতে থাকে। পরে দরজা খুলে দিলে আমার ঘুমন্ত ছেলেকে টেঁনে হেঁচড়ে নিয়ে যায়। সকালে স্থানীদের সাথে নিয়ে ফাঁড়ি গিয়ে জানতে পারি ছিনাতাইয়ের অভিযোগ তাদের আটক করা হয়েছে। পরে আমরা এলাকাবাসী রাতের ঘটনা অবহিত করলে ফাঁড়ির ইনচার্জ এক পর্যায় ছিনতাইয়ের ঘটনা মিথ্যা বুঝতে পেরে তাদের ছেড়ে দেয়। পুলিশের ধারা এমন হয়রানি আমরা আর কোনদিন হতে চাই না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাঁড়িতে অভিযোগ জানালে থানা গিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়ে আসতে বলেন মাওনা ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো.তারিকুজ্জামান। আর যুবদল নেতার এমন কি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে ফোন দিলেই পুলিশ পাঠিয়ে নিরাপরাদ ছেলেদের ধরে নিয়ে যায়?। আবার আটকের ১২ ঘন্টার মধ্যে তাদের নিরাপরাদ বলে ছেড়ে দেয়। যেহেতু মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাহলে বাদীর বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নিল না কেন? এমন ভাবে ফাঁড়িতে বহুদিন ধরে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এজন্য আমরা আজ একত্রে এসে সত্যের জয় ঘটিয়েছি।
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো.তারিকুজ্জামান বলেন, চার যুবককে ছিনতাইয়ের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে
বাদী বিবাদীদের সাথে আপোষ মিমাংসা করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এখানে হয়রানির কোন কিছু দেখছি না আমি।
গাজীপুর জেলা পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মো.আল মামুন বলেন, বিনা অপরাধে কোন ব্যক্তিকে আটক করে হয়রানি করে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।