গাজীপুর: গাজীপুরে মিনিস্টার-মাইওয়ান ইলেকট্রনিকের কারখানায় আজ শুক্রবার সকালে আগুন লাগে। ছবি: প্রথম আলো
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ধীরাশ্রম এলাকায় মিনিস্টার-মাইওয়ান ইলেকট্রনিকসের কারখানায় অগ্নিনির্বাপকব্যবস্থা না থাকার বিষয়ে আগেই সতর্ক করেছিল ফায়ার সার্ভিস। ২০-২৫ দিন আগে কারখানা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তবে কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া দেয়নি। আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে গাজীপুর জেলা প্রশাসন ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
আজ শুক্রবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে কারখানাটিতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্তও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। গাজীপুরের ঢাকা বাইপাস সড়কের ধীরাশ্রম লেভেল ক্রসিংয়ের পাশে মিনিস্টার হাইটেক পার্ক লিমিটেড ও মাই ওয়ান নামের ইলেকট্রনিক কারখানাটির অবস্থান।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. মানিকুজ্জামান জানান, আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কেউ হতাহত হওয়ারও খবর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না বলে ২০-২৫ দিন আগেও আমরা নোটিশ দিয়েছিলাম, কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। এ কারণে কলকারখানা অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।’
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, আজ সকালে ছয়তলা কারখানা ভবনের ষষ্ঠ তলার গুদামে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে তা পাশের ছয়তলা আরেকটি ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার হওয়ায় আজ কারখানাটি বন্ধ ছিল। আগুন ধরার অল্প সময়ের মধ্যেই তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং আগুন কারখানার পঞ্চম তলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাজীপুর, টঙ্গী, শ্রীপুর, উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। তবে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
কোম্পানির হেড অব মিডিয়া কে এম জি কিবরিয়া জানান, কারখানায় তৈরি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্রোডাক্ট ষষ্ঠ তলায় মজুত করে রাখা ছিল। তবে সেখানে কত টাকার পণ্যসামগ্রী ছিল, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি। কারখানায় প্রায় দুই হাজার কর্মী বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেন।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ শামসুন্নাহার, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম ও পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, মিনিস্টার কারখানায় আগুনের কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর ইসলামকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।