বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। তার ডায়াবেটিস অত্যন্ত বেড়ে গেছে, গায়ের ব্যাথা বেড়ে গেছে, তিনি কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতে, চলতে পারেন না। হুইল চেয়ারে চলছেন। কিন্তু এই সরকার, তার কর্মকর্তা ও ডাক্তাররা বলছেন, তিনি নাকি সুস্থ হয়ে গেছেন। মূলত তিনি অসুস্থ অবস্থায় কারারুদ্ধ দিন পার করছেন। আমরা তার সুচিকিৎসা ও মুক্তি দাবি করছি।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। সামনে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলে এই জালিম সরকারকে পরাজিত করতে হবে।
নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আজকে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। কারণ তাদের সেই বৈধতা নেই, সাহস নেই। আজকে আসাম থেকে হুমকি দেয়া হচ্ছে- বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের খুঁজে বের করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই, স্বাধীনতার পরে কোন বাংলাদেশি কখনও ভারতে যায়নি। এটা নিয়ে গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে বাংলাদেশকে আবারও বিপদগ্রস্ত করবার জন্য।
এই সরকারকে আবারও অবৈধ দাবি করে তিনি বলেন, এই সরকার ভোট ডাকাতি করে, জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। তারা অন্যায়ভাবে দেশনেত্রীকে আটকে রেখেছে। কারণ একটাই, তিনি বাইরে থাকলে এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করবেন। এই অবৈধ সরকার রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে। আজকে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার।
সরকারের লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে ফখরুল বলেন, আপনারা দেখছেন, কীভাবে দেশে লুটপাট চলছে। কীভাবে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। আজকে দুর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছে সরকার। দুর্নীতির টাকা দেশে বিদেশে পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে তারা। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি তাদের কোনও জবাবদিহিতা নেই। তারা বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসে না বলেই গণতন্ত্রহীন একটা সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে।
জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসুন আজকে নিজেদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, কথা বলার অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এই সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। ভোটারবিহীন সরকারকে সরিয়ে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
এ সময় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষকদলের সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও কৃষকদল নেতা মাইনুল ইসলাম প্রমুখ।