ঢাকা: বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বলেছেন, বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে অপরাধের ধরণ ও মাত্রা পাল্টেছে। প্রযুক্তিগত অপরাধ বাড়ছে। একবিংশ শতাব্দীর এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশকে আধুনিক ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশ সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইম, সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে বদ্ধপরিকর।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে ‘ইন্টারপোল পুলিশিং ক্যাপাবিলিটিস প্রোগ্রাম ফর এশিয়া এন্ড সাউফ প্যাসিফিক’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, ইন্টারপোল আন্তঃদেশীয় অপরাধ মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে এসেছে। ইন্টারপোলের ১৯৪টি সদস্য দেশের সহযোগিতায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে পুলিশিং এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইন্টারপোলের এধরণের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বিশ্বব্যাপী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইন্টারপোল বিশ্বের সকল দেশের পুলিশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান।
আইজিপি বলেন, সবার জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। ক্রমবর্ধমান আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। বিভিন্ন দেশের পুলিশের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের বিকল্প নেই।
পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান বিপিএম, পিপিএম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ইন্টারপোল সিবিটি পরিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক ম্যাগালিঙ্গম ভিমান।
ম্যাগালিঙ্গম ভিমান বলেন, আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় ও সুসংহত করার উদ্দেশ্যেই আজকের এ প্রশিক্ষণ। যাতে করে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সন্ত্রাস, মানবপাচার, অস্ত্র ও মাদক পাচার এবং দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে লাগানো যায়। এ প্রশিক্ষণ এ অঞ্চলের দেশগুলোর পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক পেশাগত অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সুযোগ ঘটাবে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ, এনসিবি ঢাকা ও পুলিশ স্টাফ কলেজকে এ ধরণের প্রশিক্ষণ আয়োজনে সহায়তা করায় ধন্যবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান বলেন, এ কোর্সটি এশিয়া ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতা এবং বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করবে এবং এ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র পুলিশ স্টাফ কলেজ হিসেবে পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ পেশাদার ও দক্ষ পুলিশ বাহিনী গড়ার লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ আয়োজনেও পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করেছে। পুলিশ স্টাফ কলেজকে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্য সেন্টার অফ এক্সিলেন্স-এ উন্নীত করার প্রয়াস অব্যাহত আছে।
পরে প্রধান অতিথি প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, ৫ দিনব্যাপী এ কোর্সে ভারতের ২ জন, ভূটানের ১ জন, মালদ্বীপের ১ জন, পূর্ব তিমুরের ২জন, শ্রীলংকার ১ জন, ফিলিপাইনের ১ জন, উজবেকিস্থানের ১ জন, ব্রুনাইয়ের ২ জন, জাপানের ১ জন, নিউজিল্যান্ডের ১ জন এবং বাংলাদেশের ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৮ জন অংশগ্রহণ করেন। জিম্বাবুয়ে, সিংগাপুর, ফ্রান্স ও নিউজিল্যান্ডের প্রশিক্ষকগণ কোর্সটি পরিচালনা করেন। – ডিএমপি নিউজ