ঢাকা: বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুনীতি দমন কমিশন এমন আরব্য রজনীর একচোখা দৈত্য, যে তার এক চোখ দিয়ে বিরোধী দলকে দেখে। সেখানে অন্যায় না থাকলেও জোর করে সরকার যেটি বলেন- এই আরব্য রজনীর সেই দৈত্যর মতো একদিকে দেখে। অন্য দিকে তারা কিছুই দেখতে পায় না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকারের নানা প্রকল্পের নামে ক্ষমতাসীন দলের লুটেরাদের কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত হয়ে এখন প্রশাসনের লোকজনও জড়িয়ে পড়ছে স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতিতে। দেশের প্রতিটি সেক্টরে যখন দুর্নীতি মহামারী আকার ধারণ করছে তখন দুর্নীতি দমন কমিশন নিরব ভূমিকা পালন করছে। কারণ ক্ষমতাসীনদের দিকে তাকানো যাবে না।
তিনি বলেন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বালিশ দুর্নীতির পর এবার দুর্নীতির বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি পর্দা কিনতে দাম দেখিয়েছি সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। পুকুর কাটা শিখতে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৬ কর্মকর্তা রাষ্ট্রের ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় করে ইউরোপে যাচ্ছেন, মশা মারা শিখতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। সিলেট বিভাগে বক্স কালভার্ট বানাতে কনসালটেন্সি বাবদ খরচ করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা। গণমাধ্যম-মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই এসব খবর বেরিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই দুদকের চোখটি তৈরি করে দিয়েছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। তার হাত-পা শাসক দলের কাছে বাঁধা রয়েছে। এই দুদক কী করছে আজকে জাতি জানতে চায়।
দুর্নীতির ফলে ব্যাংকিং খাতে দূরাবস্থা চলছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ব্যাংকগুলোতে এখন মূলধন সংকট দেখা দিয়েছে। টাকা পাচারকারী, ব্যাংক ডাকাত আর ঋণখেলাপিদের বেপরোয়া লুটপাটে দেশের ব্যাংকগুলো প্রায় দেউলিয়া। শেয়ারবাজারের লুটপাট ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে, অথচ সরকার নির্বিকার। লুটপাটের কারণে গত কয়েক মাসে শেয়ারবাজার থেকে বিদেশিরা ৬০০ কোটি টাকা পুঁজি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, আবদুল আউয়াল খান, আমিনুল ইসলাম, মীর হেলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।