ঢাকা: রাত পোহালেই প্রকাশ করা হবে ভারতের আসামের নাগরিক তালিকা বা এনআরসি। কাদের নাম সেই তালিকায় থাকবে, আর কাদের নাম বাদ পড়বে? সেই শঙ্কা আর প্রত্যাশার দোলাচলে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন আসামবাসী।
প্রায় তিন দশমিক ২৯ কোটি মানুষ নাগরিক তালিকায় নাম নথিভুক্তের জন্য আবেদন করেছিলেন। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছিল প্রায় ৪০ লাখ আবেদনকারীর নাম। চলতি বছরের ২৬ জুন এনআরসি তালিকা থেকে আরো এক দশমিক শূন্য তিন লাখ নাম বাদ পড়ে। অবশেষে শনিবার প্রকাশিত হচ্ছে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা।
এরই মধ্যে আসামজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সবসময় সতর্ক ভারতের সরকারি প্রশাসন। গুয়াহাটির সর্বত্র জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। মোতায়েন করা হয়েছে হাজার হাজার আধাসামরিক জওয়ান ও পুলিশ।
অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যেই চার বছর আগে আসাম সরকার নাগরিক তালিকা তৈরির কাজ শুরু করে। নাগরিক তালিকায় জায়গা পেতে হলে বাসিন্দাদের প্রমাণ করতে হবে তারা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে ওই রাজ্যে গেছেন।
নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে বাসিন্দাদের। গত বছরের জানুয়ারিতে নাগরিক তালিকার প্রথম খসড়া প্রকাশ করা হয়। সেখানে আবেদন করেছিলেন তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষ। অথচ এনআরসিতে নাম ওঠে এক কোটি ৮০ লাখ মানুষের। যা নিয়ে পরে তীব্র সমালোচনা ও বিক্ষোভ শুরু হয়।
তখন জুলাই মাসে সংশোধিত খসড়া নাগরিক তালিকা প্রকাশ পায়। নতুন তালিকায় দুই কোটি ৮৯ লাখ মানুষের নাম ওঠে, বাদ পড়েন উত্তর-পূর্ব আসামের প্রায় ৪২ লাখ বাসিন্দা।
পুরো রাজ্যে ‘সেবা কেন্দ্র’ তৈরি করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যাদের ইন্টারনেট পরিষেবা নেই, তারা ওইসব কেন্দ্রে গিয়ে তালিকা দেখতে পারবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, তালিকা থেকে প্রায় ৪১ লাখের বেশি আবেদনকারীর নাম বাদ পড়তে পারে।
তবে যাদের নাম বাদ পড়বে, তারা এখনই বিদেশি গণ্য হবেন না বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। তাদের আপিল করার জন্য ৬০ থেকে ১২০ দিন সময় দেওয়া হবে। আপিল আবেদনের শুনানির জন্য রাজ্যে অন্তত হাজার খানেক ট্রাইবুনাল গঠন করা হবে। এরই মধ্যে প্রায় ১০০ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ওই সংখ্যা দুই শতাধিক হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর মিলেছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই বন্দি করা হবে না বলে জানিয়েছে আসাম সরকার।