কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার শুক্রবার ১৯ জন অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার ১৯ জনের দোষ স্বীকার করার পর সকলকেই দোষী সাব্যস্থ করেছিলেন আদালত।
এদিন বিশেষ এনআইএ আদালতের রুদ্ধদ্বার কক্ষে (ইন ক্যামেরা) শুনানী শেষে বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল দোষীদের সর্বনিন্ম সাজা ঘোষণা করেছেন। ১০ জনকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাবাস, ছয় জনকে আট বছরের কারাবাস এবং দুই নারী সহ তিনজনকে ছয় বছরের কারাবাসের নির্দেশের দেন আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার রুপি জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাবাসের রায় দিযেছেন।
এনআইয়ের আইনজীবী অবশ্য সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তির দাবি করেছিলেন। দোষীদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশের নাগরিক। এদের কারাবাসের মেয়াদ শেষে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
সাজাপ্রাপ্ত চার বাংলাদেশিরা হলেন, শেখ রহমতুল্লা ওরফে বুরহান শেখ, সাদিক ওরফে তরিকুল ইসলাম, লিয়াকত আলি প্রামাণিক ওরফে মহম্মদ রুবেল এবং হবিবুর রহমান ওরফে জহিদুল ইসলাম। অভিযুক্তদের আইনজীবী ফজলে আহমেদ বলেন, আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছি না। দোষী ১৯ জনই সমাজের মূল ¯্রােতে ফিরে আসার জন্য সর্বনি¤œ সাজার আবেদন করেছিলেন। পরিবার ও সন্তান সন্ততির কথা উল্লেখ করে তারা সুস্থ জীবনে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই পাঁচ বছর সাজা খাটা হয়ে গেছে। বর্তমান কারাবাসের সঙ্গেই এই সাজা চলবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২রা অক্টোবরে খাগড়াগড়ের একটি দোতলা বাড়িতে গোপনে বোমা তৈরির সময়ে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে। সেই বিস্ফোরণে দুই জেএমবি জঙ্গি শাকিল গাজি ও করিম শেখ নিহত হয়। আহত হয়েছিল আরো একজন। ঘটনাস্থল থেকে গুলসোনা বিবি এবং আলিমা বিবি নামে দুই নারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে এনআইএর তদন্তে জানা গেছে যে, জেএমবি জঙ্গীরা ভারতের তিন রাজ্যে নেটওয়ার্ক তৈরি করে জিহাদি কার্যক্রম চালাচ্ছিল। আদালতে দেওয়া অভিযোগ পত্রে বলা হয়, কিছু যুবককে সংগঠনে নিয়োগ করে তাদের জিহাদি কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতে এবং অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল জেএমবি। সন্ত্রাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করা এবং সেখানে শরিয়তি শাসন চালু করাও তাদের লক্ষ্য ছিল।