মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন, উত্তরা প্রতিনিধিঃ কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে চাকরি ওয়ার্ক পারমিট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ দেখিয়ে চাকরি দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত হলেন মোঃ বাপ্পী ইসলাম (৪৩) , মোঃ নিয়াজুল ইসলাম (৫৪), এন এ সাত্তার (৫৮), মোঃ সাব্বির হাসান (২৪), মোঃ রাসেল হাওলাদার (২৪), মোঃ সোহরাব হোসেন সৌরভ (৩৮) ও মোঃ মোহাইমিনুল ইসলাম (৩৫)।
শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
এসময় তাদের কাছ থেকে ০৫টি ভুয়া আইডিকার্ড, বিভিন্ন লোকের নামে বাংলাদেশী পাসপোর্টের ১ম পাতার ফটোকপি ৪৮ পাতা, বিদেশে কাজ ও হিসাবের খাতা ০১টি, বিমানের টিকেটের ফটোকপি ০২টি, মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল রিপোর্ট ০৩ পাতা,জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পত্র ০২ পাতা, বাংলাদেশ জার্মান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন লোকের নামে বিভিন্ন দেশের ট্রেনিং সার্টিফিকেট ২৫টি, ০৯টি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রামে, বাংলাদেশ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর মূল ও ফটো কপি-০৭টি (যাহা ভিন্ন ভিন্ন লোকের নামে), কম্পিউটার সিপিইউ ০২টি ও প্রিন্টার-০২টিসহ বিভিন্ন প্রকার কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
খিলক্ষেত থানা পুলিশ জানায়, গত ২৮ আগস্ট মোঃ সোহেল মিয়া (৩৪), থানায় এসে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন যে, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র কানাডায় পাঠানোর কথা বলে অর্থের বিনিময়ে তাকে জাল কানাডিয়া ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করে এবং চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন তারিখে তার কাছ থেকে নগদ চার লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সোহেল মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে খিলক্ষেত থানার ২৮ আগস্ট ২০১৯ একটি মামলা রুজু করে।
পরবর্তীতে খিলক্ষেত থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাজিরুর রহমানের নেতৃত্বে ২৯ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে খিলক্ষেত থানাধীন রাজউক ট্রেড সেন্টারের সামনে হতে মোঃ বাপ্পী ইসলাম ও মোঃ নিয়াজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর তাদের সহযোগিদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তাদের দেয়া তথ্য মতে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা হতে অন্য ৫ প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত বাপ্পী প্রতারক চক্রের প্রধান হিসেবে কাজ করে। নিয়াজুল বিদেশে লোক পাঠানো বিভিন্ন এজেন্সির সামনে অবস্থান করে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে কানাডা, পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করে দিবে বলে প্রলোভন দেয়। সেই সাথে বলতে থাকে আমার বস (বাপ্পী) আমেরিকান এম্বাসিতে চাকরি করে, সে বিভিন্ন দেশে সহজে লোক পাঠাতে পারে। নিয়াজুলের প্রলোভনে কেউ রাজি হলে বিদেশে পাঠানোর নামে তাদের এক একজনের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকারও অধিক নেয় তারা। তারা জালিয়াতি করে বিভিন্ন আইডি কার্ড, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, বিভিন্ন দেশের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ও মেডিকেল রিপোর্টসহ জাল কাগজপত্র তৈরি করে থাকে। এজন্য তারা বিদেশগামীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে থাকে।