নিকাহনামা থেকে কুমারি শব্দ বাদ দেয়ার নির্দেশ

Slider জাতীয়

ঢাকা: নিকাহনামার ফরম থেকে কুমারি শব্দ বিলোপের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ওই ফরমের ৫নং কলামে কন্যার ক্ষেত্রে কুমারি শব্দের পরিবর্তে অবিবাহিত শব্দটি যুক্ত করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ছেলেদের ক্ষেত্রে ‘বিবাহিত’, ‘বিপত্নীক’ ও ‘তালাকপ্রাপ্ত’ কিনা তাও ওই ফরমে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেন। মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯-এর বিধি ২৮(১)(ক) অনুযায়ী বিবাহ রেজিস্ট্রারি বহির ৫ নম্বর কলামে বলা হয়েছে : কন্যা: কুমারি, বিধবা অথবা তালাকপ্রাপ্ত নারী কিনা? এমন তথ্য বিবাহের সময় উল্লেখ করতে হয়। বর্তমান সামাজিক বাস্তবতায় এটা একজন বিবাহ উপযুক্ত নারীর জন্য অসম্মানজনক উল্লেখ করে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে রিট করে মানবাধিকার সংগঠন নারী পক্ষ ব্লাস্ট ও মহিলা পরিষদ।

রিটে বলা হয়, মুসলিম বিয়েটা হচ্ছে এক ধরনের চুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী দুজন সাক্ষীর সামনে দুজন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
যেহেতু অনেক সময় বিয়েটা অনেকে অস্বীকার করে সেই কারণে বিয়েতে রেজিস্ট্রেশনের প্রশ্ন এসেছে এবং সেই প্রশ্নে এই বিবাহ ফরম তৈরি হয়েছে। আজকে একবিংশ শতাব্দিতে একটা মেয়ে কুমারি থাকল কি থাকল না এটা খুবই অসম্মানজনক। সিডও সনদে সরকার স্বাক্ষর করেছে নারী-পুরুষের সমতার প্রশ্নে। সেখানে কাবিননামায় বিয়ের শুরুতেই নারীদের অধিকার খর্ব হয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের কলাম সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি। এই রিটের প্রাথমিক শুনানি গ্রহণ করে হাইকোর্ট তখন রুল জারি করে। রুলের শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আদালতে মত দেন ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, ফরমের ৫নং কলামে কুমারি শব্দটি থাকা উচিত নয়। এই শব্দটি ব্যক্তির মর্যাদা ও গোপনীয়তাকে ক্ষুণ্ন করে। যা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এগুলো থাকা বাধ্যতামূলক নয়। মুসলিম শরীয়তে এ ধরনের শর্ত নেই। আবেদনের পক্ষে জেডআই খান পান্না ও আইনুনন্নাহার সিদ্দিকা শুনানি করেন। শুনানি শেষে গতকাল হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ে নিকাহনামা ফরমের ৪নং কলামের সঙ্গে ৪(ক) কলাম যুক্ত করে ছেলেদের বেলায় ‘বিবাহিত’, ‘বিপত্নীক’ ও ‘তালাকপ্রাপ্ত’ কিনা তা সংযোজন করতে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *