ঢাকা: আবহাওয়া অফিসের তথ্য ছিল আগাম, ঈদের দিন ঢাকায় বৃষ্টি ঝরবে। সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হবে। সময় যত গড়াবে, বৃষ্টির ধরন পাল্টে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণও হতে পারে। বাড়বে তাপমাত্রাও।
তবে আবহাওয়া অফিসের এই তথ্য কার্যকর ছিল রাতে। শেষ রাতে কিছুটা বৃষ্টি হয়েছে। তাপমাত্রাও বেশি। তবে সকাল থেকে ঝলমলে রোদ। রোদের ভেতর দলে দলে মুসল্লিরা ঈদগাহে গেছে। নামাজ পড়েছে। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। ডেঙ্গুর হাত থেকে রেহাই পেতে করা হয় বিশেষ মোনাজত। এরপর বাসাবাড়িতে ফেরার পর শুরু হয় পশু কোরবানি।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ত্যাগের মহিমায় আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে পশু কোরবানি দেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। যদিও সিটি করপোরেশন নির্ধারিত স্থানে পশু এনে কোরবানি দেওয়ার আহ্বানে খুব একটা সাড়া দিতে দেখা যায়নি নগরবাসীর ভেতর। রাজধানীর বাসিন্দাদের বেশিরভাগকেই নিজেদের বাড়ির সামনে অথবা সামনের রাস্তায় অথবা মাঠে কোরবানি দিতে দেখা গেছে। ফাঁকা পড়ে আছে কোরবানির নির্ধারিত স্থানসমূহ।
বর্জ্য অপসারণ প্রক্রিয়া সহজ করতে বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও সবগুলো ওয়ার্ডে কিছু স্থান নির্ধারণ করে দেয় ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
ডিএনসিসি’র ৫৪টি ওয়ার্ডে এবার পাঁচটি করে মোট ২৭০টি স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। আর ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডে পাঁচটি করে নির্ধারিত ছিল ৩৭৫টি স্থান। এসব স্থানে পশু নিয়ে এসে কোরবানি দিতে নগরবাসীদের প্রতি আহ্বান ছিল দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে। এমনকী উত্তরের নগরবাসীদের পশু জবাইয়ের স্থান থেকে বাড়িতে বাড়িতে বিনামূল্যে মাংস পৌঁছে দেওয়ারও ঘোষণা দেয় ডিএনসিসি। উত্তরের বাসিন্দাদের উদ্বুদ্ধ করতে নির্ধারিত স্থানে এনে পশু কোরবানি দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
তবে সোমবার সকাল থেকে দুই সিটির বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানের তুলনায় বাসাবাড়ির সামনে কিংবা সড়কেই কোরবানি বেশি দিতে দেখা যায়। আর নির্ধারিত স্থানগুলোকে বেশ ফাঁকা অবস্থায়ই দেখা যায়। এমন অনেক নির্ধারিত স্থান রয়েছে যেখানে প্যান্ডেল করে নির্দেশনা লেখা থাকলেও একটি পশুও কোরবানি দেয়নি কেউ।
নির্ধারিত স্থান এড়িয়ে কোরবানি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে অনেকেই জানান, তাদের বাসাবাড়ি থেকে সেসব স্থান দূরে। অনেকে আবার মাংস পরিবহনের ঝামেলা এড়াতে ও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থার ওপর আস্থা রাখতে না পারায় নিজেরাই নিজেদের মতো করে কোরবানি দিচ্ছেন। তবে নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিতে নগরবাসীর প্রতি এখনও আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে দুই সিটি করপোরেশন।