হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ আগামী ১২ আগস্ট মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা । ঈদ-উল-ফিতরে কেনাকাটা ও মিষ্টি সেমাই নিয়ে যেমন তোড়জোড় থাকে তেমনি কোরবানি ঈদে থাকে পশু কেনাকাটা ও দা-ছুরি কেনাকাটার ঝোঁক।কামারেরা কাটাচ্ছে নির্ঘুম রাত।
সারাবছর খুব একটা কাজের চাপ না থাকলেও কোরবানি ঈদ উপলক্ষে তাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়েছে কয়েকগুন। সকাল থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত টুং টাং শব্দে মুখরিত এখন কামারপাড়া। পবিত্র ঈদুল আজহাকে ঘিরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কামারপাড়ার লোকজন।
আগুনের তাপে শরীর থেকে ঝড়ছে অবিরাম ঘাম তবুও দিন-রাঁত সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে তারা।
সদর উপজেলার সাপটানা বাজার,গোশলা বাজার,মিশন মোড় , আদিতমারী বাজার, কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা বাজার,চাঁপারহাট, হাতীবান্ধা উপজেলা বাজারসহ ছোট-বড় সব বাজারে সর্বত্র কামারের ব্যস্ত সময় পার করছে।জেলার কামার পল্লীগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
কয়লার দগদগে আগুনে লোহাকে পুড়িয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে দা, কুড়াল, ছুরি, চাকুসহ ধারালো সামগ্রী। কেউবা অর্ডারকৃত আর কেউ নিজে লোহাদিয়ে ধারালো সমগ্রী তৈরি করছে।
তবে এসব তৈরিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি কামারের দোকানগুলোতে। পুরনো নিয়মেই চলছে লোহগলিয়ে ধারালো সামগ্রী তৈরির কাজ। তবে অনেকে অতিরিক্ত অর্ডার নেওয়া কাজ ইতিমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছেন৷ তবে সারা বছরে কম কাজ হলেও এ সময়ে কাজ বেড়ে যাওয়ায় তারা এখন বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে৷
কামারেরা জানান, এ পেশায় বেশি পরিশ্রম। শ্রম অনুযায়ী তারা এর মূল্য পাচ্ছেন না। কারণ লোহার দাম বেশি। এতে জীবিকা নির্বাহে তাদের বেশ কষ্ট পেতে হয়। শুধু পরিবারে ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এ পেশাটিকে তারা এখনো আঁকড়ে ধরে আছেন। এছাড়াও সারাবছরে পরিবারে ও কৃষি জমিতে ব্যবহারের প্রয়োজনে অনেকে তা তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
তবে কোরবানির পশুর জন্য বেশি প্রয়োজন হওয়ায় সবাই এখন ছুটছে কামারদের কাছে। কাকিনার বাজারের কামার মানিক মোহন্ত কর্মকার জানান, পশু জবাইয়ের বিভিন্ন অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এখন তার প্রতিদির ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা আয় হচ্ছে।