শ্রীবরদী (শেরপুর): শ্রীবরদীতে শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছয় শিক্ষার্থী আহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে তিন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীবরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। আর বাকি তিন জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে শ্রীবরদী এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, সম্প্রতি এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই শিক্ষক পাঠদানের সময় অশালীন কথা বলেন। সেই সঙ্গে সঠিকভাবে পাঠদান না দিয়ে গল্প করেন। এ বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার নূর ইসলাম ক্লাস চলাকালীন সময়ে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর বেত্রাঘাত করেন। এতে তিন জন গুরুতর আহত হয়ে শ্রেণি কক্ষে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ সময় অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাদের শ্রীবরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করে।
হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলো, ওই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ও খামারিয়া পাড়া মহল্লার রুকুনুজ্জামান ওরফে শিপনের মেয়ে রওনকজাহান বুশরা, একই মহল্লার খোকন চৌধুরীর মেয়ে শাউলিয়া জাহান শূর্মি ও সাতানী শ্রীবরদী মহল্লার আ. করিমের মেয়ে সোহানা ইসলাম স্মৃতি। এদিকে কৌশলে শিক্ষক নূর ইসলাম স্কুল থেকে পালিয়ে গেলেও অভিভাবকদের চাপের মুখে সন্ধ্যা ৬ টার দিকে নূর ইসলামকে আটক করে পুলিশ।
সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিমা আক্তার জানায়, ‘ওই শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় আমাদের সঙ্গে অশালীন কথা-বার্তা বলেন এবং সঠিকভাবে পাঠদান না দিয়ে গল্প করেন। এ বিষয় নিয়ে আমরা প্রধান শিক্ষকের নিকট বিচার দেওয়ায় নূর ইসলাম স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদেরকে মারপিট করেন।’
এ বিষয়ে শ্রীবরদী এমএনবিপি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, একদিন পূর্বে শিক্ষার্থীরা আমার নিকট মৌখিকভাবে বিচার দিয়েছিল। আমি তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলি।
অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ক্লাসে পড়া না পারার কারণে স্কেল দিয়ে দুইবার করে মেরেছি।’ তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন ভাষায় কথা বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ ঘটনায় উপজেলা একামেডিক সুপারভাইজার ও ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন স্কুল পরিদর্শন করেন। তারপর বলেন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক নূর ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।