ডেস্ক: ভারত সরকারের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল ও জম্মু-কাশ্মীরে উত্তেজনাকর অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতির ওপর ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। দিল্লিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস নিরাপত্তা বিষয়ক এলার্ট জারি করেছে। তাতে অবিলম্বে কাশ্মীর অঞ্চল ছেড়ে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে মার্কিনিদের প্রতি। অন্যদিকে কাশ্মীরে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের বিষয়ে ভারতকে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণা দেন। এর ফলে জম্মু ও কাশ্মীর এতদিন যে শায়ত্ত শাসনের সুবিধা পেত তা বাতিল করা হয়েছে।
এ অবস্থায় উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সেই উত্তেজনা ভারত ও পাকিস্তানে সংক্রমিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে আলোচনা করতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের জরুরি যৌথ অধিবেশন আহ্বান করেছেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। এমন অবস্থায় ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের প্রতি শান্তি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুঁতেরার মুখপাত্র স্টিফেন দুজাররিক সোমবার বলেছেন, মহাসচিব সব পক্ষের প্রতি সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে দুজাররিক বলেন, আমরা ওই অঞ্চলের উত্তজনাকর পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। সব পক্ষের প্রতি সংযম সাধনের আহ্বান জানাই। জাতিসংঘ মহাসচিব কাশ্মীর সঙ্কটে কোনো ভূমিকা রাখবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এ নিয়ে মহাসচিব হিসেবে তিনি মত দিয়েছেন এবং এখনও তার অবস্থান সেই একই।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা জম্মু ও কাশ্মীর পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে। জম্মু কাশ্মীরের সাংবিধানিক মর্যাদার বিষয়ে ভারত সরকার যে অবস্থান নিয়েছে এবং ওই অঞ্চলকে দুটি ইউনিয়ন টেরিটোরি করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, সে বিষয়ে আমরা নোট নিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মর্গান ওরতেগাস এসব কথা বলেন। ওয়াশিংটন থেকে এই বিবৃতি দেয়া হয়। এতে তিনি আরো বলেন, ভারত সরকার কঠোরভাবে বলেছে এটা হলো তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়।
দখলীকৃত কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতি সম্পর্কেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই কর্মকর্তা। সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, ওমর আবদুল্লাহ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের আটক রাখার বিষয়ে তিনি বলেছেন, সেখানে আটক করার রিপোর্টের বিষয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। পাশাপাশি আহ্বান জানাই মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং এর প্রভাব পড়েছে যেসব মানুষের ওপর তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে। এ সময় তিনি নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। বলেন, সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। তবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর সঙ্কট সমাধানে মধ্যস্থতার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, সে বিষয়টি উল্লেখ করেননি মর্গান ওরতেগাস।