ভারতে তিন তালাক এখন থেকে ফৌজদারি অপরাধ

Slider নারী ও শিশু


কলকাতা: ভারতে তিন তালাক প্রথাকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে একটি আইন সংসদের দুই কক্ষেই কণ্ঠভোটে পাস হয়েছে। এবার এটি প্রেসিডেন্টের অনুমোদন পাওয়ার পরই আইনে পরিণত হবে। বিল পাস হওয়াকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, মুসলিম মা-বোনেরা আজ জিতে গিয়েছেন। সম্ভ্রমের সঙ্গে বাঁচার অধিকার পেয়েছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী টুইট করে বলেছেন, সেকেলে ও মধ্যযুগীয় প্রথাকে অবশেষে ইতিহাসের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হল। তিন তালাক প্রথাকে লোপ করা হলো সংসদে। মুসলিম মহিলাদের প্রতি ঐতিহাসিকভাবে যে ভুল করা হয়েছে, তা শোধরানো হলো। এটা লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক সাম্যের পক্ষে জয়।

গত সপ্তাহে লোকসভায় তিন তালাককে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করে মুসলিম মহিলা (বিবাহ অধিকার সংরক্ষণ) বিল ২০১৯ পাস হয়েছিল। তবে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাধিক্য না থাকায় বিলটি পাস নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। সংযুক্ত জনতা দল এবং এআইডিএকের ওয়াকআইট এবং বহুজন সমাজ পার্টি, তেলেগু দেশম পার্টি, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির মতো দলের সদস্যদের অনুপস্থিতির সুযোগেই মঙ্গলবার বিলটি ৯৯-৮৪ ভোটে পাস হয়েছে। এদিন রাজ্যসভায় মুসলিম মহিলা (বিবাহ অধিকার সংরক্ষণ) বিল ২০১৯ পেস করে আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়ন, মানবিকতা, লিঙ্গ সমতার প্রশ্নে এই বিলকে নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। এই বিলটি কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে নয়। তবে এটা হলো দেশের সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়। তিনি উল্লেখ করেন, অনেক ইসলামিক দেশ এরই মধ্যে তিন তালাক রীতি বাতিল করেছে। তিনি বলেছেন, তিন তালাক বন্ধে ভারতের শীর্ষ আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তা বন্ধ হয়নি। এমনকি অর্ডিন্যান্স জারি করেও এই প্রথা বন্ধ করা যায়নি। বরং আদালতের নির্দেশের পরে তিন তালাকের অভিযোগে ৫৭৪টি মামলা হয়েছে। তাই এই কঠোর আইনের দরকার হয়ে পড়েছিল। তবে, এই বিলে তাৎক্ষণিক তিন তালাক বিরোধী আইনে ফৌজদারি অপরাধের বিষয়টির সমালোচনা করে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য বিরোধীরা। বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছিল। সে ক্ষেত্রেও ভোটাভুটিতে বিরোধীদের প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, বিজেপি সরকারের প্রথম দফায় তিন তালাক বন্ধে বিল লোকসভায় পাস করাতে পারলেও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় পাস করাতে ব্যর্থ হয়েছিল মোদী সরকার। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর সরকার বিলটি পাস করানোর জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *