ঢাকা: সরকারী ষ্টিকার ব্যবহারকারী গাড়িতে করে প্রতি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ৪জন লোক ৩০ মিনিটের জন্য ভোট গ্রহন প্রশাসনকে জিম্মি করে স্থানীয় লোকজন নিয়ে ১৫টি বইয়ে সিল মেরে চলে যায়। এই ঘটনার সময় ভোট গ্রহন প্রশাসন নীরব ও নির্বিকার হয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকে। কোন প্রশ্নের উত্তর দেয় না। নাটক শেষে হাত জোর করে ক্ষমা চায়। এই বিকল্প প্রশাসনে কারা থাকেন! এটা নিয়ে চলছে অনুসন্ধান। আলোচনা সমালোচনায় এখন এই বিকল্প প্রশাসন।
এরশাদ সরকারের আমলে ব্যালট বাক্স কেন্দ্র পর্যন্ত যেত কম। বিএনপির আমলে কেন্দ্রে জাল সিল মারত দলীয় কর্মীরা। আওয়ামীলীগের সময়ও একই কায়দায় হয় এই কাজ। গেলো সংসদ নির্বাচনে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়নি। ভোট গ্রহন সংশ্লিষ্ট লোকজন সিল মেরেছে বলে সন্দেহ সবার। কিন্তু এবার কাওরাইদ ইউনিয়নের উপ-নির্বাচনে স্টাইল পাল্টে গেছে। স্থানীয় সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা এই কাজে তেমনভাবে অংশ গ্রহন করেনি। তবে একটি কেন্দ্রে বিকল্প প্রশাসনের সাথে সিল মারার কাজে একজন আইনজীবীকে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নির্বাচনে সিল মারা নতুন কোন ঘটনা নয়। তবে এ বারের স্টাইলটা আতঙ্কের নতুন কৌশল। ভোট গ্রহন কর্মকর্তারা কোন অনিয়ম করেনি কিন্তু বিকল্প টিম এসে অনিয়ম করে চলে গেছে। ভোট হয়ে গেছে মর্মে খবর হওয়ার পর আর ভোটাররা কেন্দ্রে যায় নি। কয়েকজন যাও গিয়েছেন তারা ফিরে গেছেন কারণ ভোট খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গোপন সূত্র বলছে, কাওরাইদ ইউনিয়নের প্রতিবেশী একটি ইউনিয়নের লোকজন এই বিকল্প প্রশাসনে ছিলেন। চিহিৃত সন্ত্রাসীদের নিয়ে গঠিত এই বিকল্প টিমে ছিলেন ২/১ একজন সরকারী লোক। ঘটনার সময় জনগন যেন উত্তেজিত হতে না পারে সেজন্য তৈরী করা হয়েছে আতঙ্ক। বের করে দেয়া হয়েছে এজেন্ট।
অভিযোগ রয়েছে, সিল মারার পর বিকল্প প্রাসনের পক্ষ হয়ে জনৈক এক স্থানীয় কর্মী প্রতিপক্ষ নারী এজেন্টকে ইভটিজিং পর্যন্ত করেছে। জাল ভোট মারার পর নারী এজেন্টকে অশুভ ইঙ্গিত দিয়ে ডাকা হয়েছে ভোট হিসেব করতে। ছিঃ ছিঃ। একটি সভ্য দেশে এই ধরণের অসভ্যতা লজ্জাস্কর। তবে যাই হউক, একটি ছোট উপ-নির্বাচনে সকল কেন্দ্রে বিকল্প প্রশাসন ব্যবহার করে জাল ভোট দেয়া প্রমান করে বিজয়ী হওয়ার জন্য একটি কেন্দ্রও নিশ্চিত ছিল না। এই ধরণের বিজয়, গণতন্ত্রের জন্য মৃত্যুর সংকেত।
সাধারণ মানুষ বলছেন, জাল ভোট দেয়ার সংস্কৃতির কারণে ভোটাররা যখন কেন্দ্রে বিমূখ ঠিক ওই সময় মাইকে ডেকে ভোটার আনার কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২৫ জুলাই বিকল্প প্রশাসন ব্যবহার করে সকল কেন্দ্রে জাল ভোট সংকের দেয় যে, আর মাইকে ডাকলেও ভোটার আসবে না। একে গণতন্ত্র বলে না। এটাকে কোন তন্ত্র বলে, সময় বলে দেবে।
দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এই সব ঘটনার বর্ননা দিয়ে একজন প্রার্থী ভোট বাতিল চেয়ে তাৎক্ষনিকভাবে রিটার্নিং অফিসারের নিকট লিখিত আবেদনও করেছেন।
রিটার্নিং অফিসার অভিযোগ গ্রহন করে বলেছেন, দ্রুতই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।