গুরুদাসপুর, নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪১০ হেক্টর জমির আমন ধান ও পাট নিমজ্জিত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া বাঁধে বালুর বস্তা ফেলে ফসল রক্ষার চেষ্টা সফল হচ্ছে না।
উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের যোগেন্দ্রনগর এলাকায় বেড়িবাঁধটি অবস্থিত। দিঘদারিয়া বিলপানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি সংগঠন প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট জমি দেখভাল করে। বেড়িবাঁধটি গত সোমবার ভাঙতে শুরু করে। দুদিন পর থেকে শুরু হয় বালুর বস্তা ফেলা কাজ। কিন্তু এতে কাজ হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রকল্প এলাকার কৃষিজমি এক ফসলি থেকে তিন ফসলি করা হয় প্রায় ছয় বছর আগে। এ বছর সেখানে আমন ধান ও পাটের আবাদ করেছেন কৃষক। কিন্তু বন্যার পানির তোড়ে বাঁধটির প্রায় ৩০০ ফুট এলাকা ভেঙে যায়। বন্যার পানি ঢুকে মাঠের পর মাঠের ফসল নিমজ্জিত হয়।
স্বেচ্ছাশ্রমে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করা হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বাঁধ সংস্কার করা হয়। গত বুধবার বাঁধটির সংস্কারকাজ শেষ হয়। কিন্তু ফসল রক্ষার চেষ্টা ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
২০১৩ সালে দিঘদারিয়া বিলপানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড যাত্রা শুরু করে। এই সমিতি ৪১০ হেক্টর জমিতে তিন ফসলি আবাদ শুরু করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে। গড়ে তোলে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থাপনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম জানান, চলনবিল-অধ্যুষিত এলাকায় বেড়িবাঁধ দিয়ে এক ফসলি জমিতে এখন তিনটি ফসল ফলছে। এবারও ওই প্রকল্প এলাকায় আমন ধান ও পাটের আবাদ হয়। কিন্তু বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, বালুর বস্তা ফেলে বেড়িবাঁধটি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এতে কৃষকের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ফসল রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ছে।
দিঘদারিয়া বিলপানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজুল ইসলাম বলেন, বেড়িবাঁধটি এলাকার কৃষকের মধ্যে নতুন আশা জাগায়। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এখন বাঁধের সংস্কার করা অংশ দিয়ে পানি ঢুকছে। এতে শঙ্কিত কৃষক।