ঢাকা: দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, এই অভিযোগ দীর্ঘ সময়ের। তবে অভিযোগটির মৌলিক অবস্থান ছিল জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরেই বেশী। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এই ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ায় গণতন্ত্র মৃত্যুর দিকে রওনা দিয়েছে। ভোট যখন উৎসব ছিল তখন ভোটারদের নিয়ে প্রার্থীরা এ ভাবেই সভা করতেন। সভায় প্রার্থীরা নিজেদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভোটারদের বুঝাতেন। আর ভোটাররা উৎসবে মেতে উঠে নির্বাচনের আগের সময়ে নিজেদের রাষ্ট্রের মালিক মালিক ভাবও দেখাতেন। আর ভোটের দিন নতুন পোষাকে ছেলে মেয়ে নাতি-নাতনী নিয়ে ভোট কেন্দ্র যেতেন আর ভোট প্রয়োগ করতেন। এই ভাবে নির্বাচিত হতো জনপ্রতিনিধি।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগের রাতেই হয়ে যায় বলে অভিযোগ আছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ব্যালট সকালের আসা শুরু করার কারণে মানুষ ঘুরে দাঁড়াবার স্বপ্ন দেখতে থাকে। দেখা গেলো এই স্বপ্নও মারা গেলো। কারণ ভোট যারা গ্রহন করে তাদেরকে জিম্মি করে হঠাৎ শুরু হয় ভুমিকম্প। ৪/৫ জনের একটি টিম এসে ঘন্টা খানেট সিল মেরে দ্রুত চলে যায়। এই খবরে ভোটাররা আর কেন্দ্রে আসে না। যদি কিছু ভোটার খবর না পেয়ে ভুলে চলে আসে তবে তারা এসে দেখেন তাদের ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এমনকি ১১ কেন্দ্রর একটি ছোট ভোট উৎসবেও সকল কেন্দ্র লুটে নিতে হয়। মানে হল একটি কেন্দ্রেও বিজয়ের সম্ভাবনা না থাকায় সব লুট। ছিঃ।
সুতরাং ভোট উৎসব এখন আতঙ্কের উৎসব। মাইক দিয়ে ডেকেও আর ভোটার আসে না। কারণ আসলেও ভোট দিতে পারে না। ভোটার আহত হয়, নিহত হয় বা গ্রেপ্তার হয়। তাই বিপদ জেনে তারা আর আসতে চায় না।
কিছুদিন আগে শুনাগেল মসজিদের মাইক দিয়ে ভোটারদের ভোট দিতে আহবান করা হয়েছে। তবুও ভোটাররা কেন্দ্রে আসছে না। এটা কেন? যে ভোটার ভোটের অধিকারের জন্য রক্ত দিয়েছে সে ভোটারকে মাইক দিয়ে ডেকেও আনা যায় না। কি কারণ? এটা এখন সকলেরই জানা। এই প্রশ্নের উত্তর হল, ভোট দিতে আসলে আহত হতে হয়, জীবনও দেয়া লাগতে পারে। ভোট দিতে এসে লাশ হওয়া বা আহত হওয়ার ইচ্ছা কোন ভোটারের থাকে না। তাদেরকে ডেকে আর কেন্দ্র নেয়া যাবে না। তাই মিছি মিছি কষ্ট করে মাইক দিয়ে ভোটার ডেকে আর লাভ নেই।