রাতুল মন্ডল শ্রীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সূতিয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের জেলে পাড়ার মহল্লার চলাচলের জন্য একমাত্র রাস্তাটি সূতিয়া নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।
এখন ভাঙনের ভয়ে দিনপাত করছে জেলে পাড়ার প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের সদস্য।
এই বর্ষায় ভারী বর্ষণের ফলে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে কাটছে গ্রামবাসীর দিন।
জেলে পাড়ার বাসিন্দারা জানান, ২০০৬ সালে নদীতে সামান্য ভাঙন দেখা দিলে, ভাঙন রোধের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজস্ব তহবিল থেকে মাটি, আর বালি ভর্তি বস্তা দিয়ে জরুরি ভাবে অস্থায়ী ব্যবস্থা করে নদী ভাঙন রোধ করলেও এই বর্ষায় ভারী বর্ষণে পূনরায় নদী ভাঙন শুরু হয়।
আর এই ভাঙনে জেলে পাড়ার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি ইতিমধ্যে সূতিয়া নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।
ভাঙন অব্যাহত থাকায় গ্রামের তিন শতাধক বিভিন্ন ফলের গাছ বিলিন হয়ে গেছে নদী গর্ভে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের জেলে পাড়ার এই মহল্লা সূতিয়া নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ায় লোকজন চলাচল করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। কিছু স্থানে বাড়িঘরের উঠানের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে জেলে পাড়ার মানুষের । এবার বর্ষার শুরুতেই ভাঙন শুরু হওয়ায় ইতিমধ্যে চলাচলের রাস্তা ও ১ মোদি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে নদী ভাঙনে চলে যেতে পারে বসতঘর।
জেলে পাড়ার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ চন্দ্র বর্মন বলেন, ভারি বর্ষনের ফলে উজান থেকে পানির ঢল অনেক বেশি বেগে বয়ে যাওয়ার ফলে নদী ভাঙনের মাত্রা বেশি হচ্ছে।
এই মহল্লার আরেক বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাতেম আলী বলেন, এই মহল্লায় প্রায় ৫০টি পরিবারের বসবাস, ইতিমধ্যে আমাদের মহল্লার চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি নদীগর্ভে চলে গেছে। যেভাবে ভাঙন চলছে দ্রুত রোধ করা না হলে গ্রামের আরও অনেক বাড়িঘর নদীর গর্ভে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শরিফুজ্জামান বলেন, নান্দিয়া সাঙ্গুন গ্রামের সূতিয়া নদীর তীরে জেলে পাড়ার নদীর ভাঙন বিষয়ে ইতিমধ্যে আমাকে জানানো হয়েছে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করা যায় কি না, দেখব। যদি না হয় তাহলে অন্য দপ্তরের সহযোগিতা চাওয়া হবে। তবে নদীভাঙন রোধে করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখনো তাদের কার্যক্রম না থাকায় সামান্য ভাঙন হলে আমরা প্রকল্প দিয়ে থাকি।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ শামসুল আরেফিন বলেন, নদী ভাঙন রোধ করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ, বিষটি খুব দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডে কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে নদী ভাঙন রোধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট শামসুল আলম প্রধান বলেন, কাওরাইদ ইউনিয়নের নান্দিয়ান সাঙ্গুন গ্রামের জেলে পাড়ার নদী ভাঙনের বিষয়ে জেনেছি। কিন্তু আমাদের সামান্য বরাদ্দে সেই ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়।