ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের (প্রিন্স মুসা) সব কিছুই অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
বুধবার দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক কমিশনার বলেন, ‘মুসা-বিন-শমসেরের জীবন-যাপন, তার আচার-আচরণ সব কিছুই অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক। সুইস ব্যাংকে ৫১ হাজার কোটি টাকা জব্দসহ অনেক তথ্য বিজনেস এশিয়ার মাধ্যমে পাওয়ার পরই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেই।’
দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে মুসা তার সকল অর্জন বৈধ বলে দাবি করেছেন উল্লেখ করে সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘মুসা তার অস্ত্র ব্যবসার কথা স্বীকার করেছেন। তবে লিগ্যাল কিনা সে বিষয়ে কোন উত্তর দিতে পারে নাই। বরং অস্ত্র ব্যবসার বিষয়টি অতি গোপনীয় বলে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তাকে দুদকের কাছে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে। প্রয়োজনে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ১৮ ডিসেম্বর মুসা-বিন-শমসেরকে জিজ্ঞসাবাদ করে দুদক। জিজ্ঞাবাদের প্রিন্স মুসা তার সকল অর্জনকে বিদেশ থেকে অর্জন এবং সব কিছু বৈধ বলে দাবি করেন।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী মুসা বিন শমসেরই বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তার মূল সম্পত্তি ১২ বিলিয়ন ইউএস ডলারের উপরে। তিনি অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক পরিচিত।
ড. মুসা ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে অনুদান দিতে চেয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন। লেবার পার্টির নেতা টনি ব্লেয়ার নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য তার পাঁচ মিলিয়ন ডলার অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।
চলতি বছর ‘বিজনেস এশিয়া’ম্যাগাজিন মুসা বিন শমসেরকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে বলা হয়, বাংলাদেশি এ ধনাঢ্য অস্ত্র ব্যবসায়ীর ৭ বিলিয়ন ডলার বা ৫১ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে সুইস ব্যাংকে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রত্যাহার করে নিলে মুসা বিন শমসের এতে ৩ বিলিয়ন ডলার অর্থায়নের কথা বলে বাংলাদেশেও আলোচনায় আসেন। রহস্য-বিবরে ঢাকা মুসা বিন শমসেরকে এবার ফের আলোচনায় আনল দুদক।
এ উপমহাদেশে তিনি শীর্ষস্থানীয় বর্ণাঢ্য ব্যক্তি যিনি এক বিলিয়ন পাউন্ড উপার্জন করেছেন বেশিরভাগ ট্যাঙ্ক, যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র বেচাকেনার ব্যবসা করে।
দুদক উপপরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী তার বিষয়টি অনুসন্ধান করছেন।