স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বরগুনায় দিন-দুপুরে স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। বরগুনার ঘটনাটি কেন ঘটেছে তা তদন্ত করা হবে। তবে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় পুলিশ বসে নেই।
ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে অবশ্যই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। ’
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় নগরের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) অ্যাওয়ার্ড প্রদান- ২০১৯ অনুষ্ঠানে শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উদ্যোগে আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোওয়ারী। সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
বরগুনায় প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি কিনা এমন প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘এ ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নয়। এ ব্যাপারে পুলিশবাহিনী সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। এ ধরনের দু’একটি ঘটনা আগেও ঘটেছে। ফেনীতে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের পর পিবিআই তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে আসলে যারা জড়িত তাদের ধরে আদালতে সোপর্দ করেছে। এখন আমাদের পুলিশ অনেক দক্ষ, তারা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় সক্ষম। ’
তিনি বলেন, ‘দেশে যত ঘটনাই ঘটুক, পুলিশ তা বের করতে পারবে। পুলিশের দক্ষতা-সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এই পুলিশকে যদি ১০ বছর আগের পুলিশ মনে করে কেউ, তাহলে ভুল করবে। আমাদের পুলিশ অনেক সক্ষম ও অনেক দক্ষ। তারা অনেক ইনফরমেটিভ। ’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা আমাদের জন্য অবশ্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা শুধু যে নিরাপত্তা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছি তা নয়, ওই জায়গায় বিশাল বনও উজাড় হয়ে গেছে। সামাজিক পরিবর্তনও আসছে। একজন স্থানীয় শ্রমিক যদি দৈনিক ৫০০-৬০০ টাকা আয় করতেন, এখন একজন রোহিঙ্গাকে ২০০ টাকা দিলেই তারা কাজ করছে। আবার তারা নির্ধারিত জায়গা থেকে বেরিয়ে যে কোনো জায়গায় যাবার চেষ্টা করছে। নিরাপত্তা বাহিনী আবার তাদের ধরে নিয়ে আসছে। ’
রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘নাফ নদীর তীরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় ছিল, সেই দৃশ্যটি নিশ্চয় মনে আছে। এই দৃশ্যটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার চোখে পানি এনে দিয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা চলে এসেছে- সেটি আমাদের ধারণার বাইরে ছিল। ধারণা থাকলে আগে থেকে একটা ব্যবস্থা করতাম। এখন সে রকম কোনো ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের জন্য একটা কাঁটা তারের বেড়া করার কথা ছিল, সেটির কাজও সম্পন্ন করতে পারিনি। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ করার চেষ্টা করছি, যাতে তারা ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে। ক্যাম্পের ভেতরে যেন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি। ’
দেশের পুলিশ বিভাগে ২৩ হাজার নারী সদস্য কাজ করেন। এর মধ্যে ৭২ জন পুলিশ সুপার ও তদুর্ধ্ব কর্মকর্তা। এবার ১০ নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে উইমেন নেটওয়ার্কিং অ্যায়ার্ড দেওয়া হয়। বাৎসরিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের আয়োজনে তাদের পুরস্কাকৃত করা হয়। এবারের পুরস্কার অনুষ্ঠানটি চট্টগ্রামে করা হয়েছে।