ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার (২৩-২৫ জুন) উত্তরবঙ্গের চার জেলা বগুড়া, রংপুর, লালমনিরহাট ও দিনাজপুর সফর করেছেন।
সফরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া, অর্থনৈতিক সম্পর্ক, খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন এবং দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক অংশীদারিত্বের বিষয়েও সমর্থন চান।
বুধবার ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত মিলার বগুড়ার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সে সময় ‘উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার’ হিসেবে বগুড়ার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়। স্থানীয় অর্থনীতি ও শিক্ষাখাতসহ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্ধিত সহযোগিতার সম্ভাব্য খাতগুলো নিয়েও কথা বলেন তারা।
রংপুরে রাষ্ট্রদূত মিলার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসায় বিনিয়োগসহ সহযোগিতা বাড়ানো যায় এমন বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন। রাষ্ট্রদূত জোইক্ক্য কৃষক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং নারী ও শিশুসহ গ্রামীণ ক্ষুদ্র পর্যায়ের কৃষকরা বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তাকে এগিয়ে নিতে কীভাবে ভূমিকা রাখছে তা পর্যবেক্ষণ করেন।
রাষ্ট্রদূত জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় যে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-সাংস্কৃতিক ভূমিকা রাখছে তা নিয়ে কথা বলেন তারা।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনী ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তৃতীয় যৌথ মহড়া ‘প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল’ পরিদর্শন করতে লালমনিরহাট সফর করেন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার।
এ মহড়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবিক সহায়তা ও দুর্যোগকালীন ত্রাণ এবং সিভিল-মিলিটারি অপারেশন। মিলার স্থানীয় কদমতলা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর কর্মীরা স্থানীয় জনগণের ওষুধপত্র বিতরণ ও ফিজিক্যাল থেরাপি, দাঁত ও চোখের সমস্যার সেবা দেন। রাষ্ট্রদূত ফকিরের টোকেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ও পরিদর্শন করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে যে পাঁচটি স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ে প্লাম্বিং, বৈদ্যুতিক ও কাঠামোগত উন্নয়নসহ সংস্কারকাজ চলছে ফকিরের টোকেয়া সেগুলোর একটি।
মিলার ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রাম (আইভিএলপি) এবং কেনেডি-লুথার ইয়ুথ এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড স্টাডি (ওয়াইইএস) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে দেখা করেন।
এই অ্যালামনাইরা এক্সচেঞ্জ কর্মসূচিতে অর্জিত শিক্ষা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কীভাবে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি তা শোনেন। দুই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা যেসব ক্ষেত্রে কাজ করছেন তার মধ্যে রয়েছে বহুত্ববাদ, সুশাসন, মানবাধিকার ও শিক্ষা।
উত্তরবঙ্গ সফরে রাষ্ট্রদূত মিলার মহাস্থানগড়, কান্তজিউ মন্দির ও তাজহাট প্রাসাদসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানও পরিদর্শন করেন।
এ সফর তাকে আবারো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং এর জনগণের সবার জন্য ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের গুরুত্বের কথাটি মনে করিয়ে দেয়।