ঢাকা: প্রতি পাতায় পাতায় ভুল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম গত জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, আওয়ামী লীগের পরিত্যক্ত (ড. কামাল হোসেন) নেতাকে ভাড়া করে বিএনপি সামনে দাঁড় করালো। সেই ড. কামাল হোসেন কী করলেন, বিএনপিকে দিয়ে নির্বাচনের মাঝ পথে মাঠ ফাঁকা করে দিলেন। আমরা ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে দিলাম। বিএনপির ভাড়া করা লোক কাজ করল আমাদের পক্ষে! এই ভুলের রাজনীতি থেকে বিএনপি কবে বের হবে? আসলে বিএনপি হচ্ছে খুনীর দল, খুনীদের লালন-পালনকারীদের দল। বিএনপি এখন পাপের ফল ভোগ করছে। বিএনপি আমাদের কাছে বার বার হেরে গেছে, নির্বাচনে মাঠ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার কৌশলের কাছে তারা বার বার পরাজিত হয়েছে। আন্দোলন করারও ক্ষমতা তাদের নেই।
একমাত্র আওয়ামী লীগই জানে কীভাবে আন্দোলন করতে হয়। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুঞ্জয়ী নেতা। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক, নির্বাচনসহ সব কিছুতেই কৌশলে বিরোধী দলকে মোকাবিলা করে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন এমপিওভূক্তির বিষয়টি পড়ে আছে। জনপ্রতিনিধিদের এলাকায় জবাবদিহি করতে হয়, সে কারণে এ ব্যাপারে এমপিদের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। মোবাইল ফোনে কেন কর ধার্য করছি? সঞ্চয়পত্র ক্ষুদ্র ও গরীব পরিবারের কাছে একটি সোনার বাটি। তাই সঞ্চয়পত্রের ওপর থেকে অতিরিক্ত কর প্রত্যাহার করতে হবে। আমলাতন্ত্রের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে যত বেশি ফাইল আটকে রাখতে পারে, সে ততবড় আমলা। সরকারকে ব্যর্থ করতে অনেকেই চক্রান্ত করে যাচ্ছে। সর্বত্র জামায়াত-শিবির-বিএনপির চক্রান্তকারীরা বসে আছে। তাই আমলাতন্ত্রের জটিলতা থেকে বের হতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের এতো বড় সফলতার পরও দুঃখ লাগে ব্যাংকিং খাতে ঋণ খেলাপীরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে গেছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে, ঋণ খেলাপীদের সকল সম্পদ বিক্রি করে উদ্ধারকৃত টাকা গরীব-মেহনতি মানুষের মধ্যে প্রয়োজনে ভর্তুকি দিন। এদের কোন ছাড় নেই, জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। কিছু সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী নেতাদের রাজনীতিতে প্রবেশের সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, কিছু ব্যবসায়ী আছেন তারা ব্যাংক, গার্মেন্টস, ওষুধ কোম্পানি ও গণমাধ্যমের মালিক। তারা সব ব্যাপারে অভিজ্ঞ। তারা আজকে সরকারি দলে এমনকি সংসদে পর্যন্ত ঢুকে গেছে। এ সমস্ত সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীরা আমাদের বন্ধু হতে পারে না। এই সংসদ হবে রাজনৈতিক নেতাদের সংসদ। যারা রক্ত দিয়ে ঘাম দিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। ওই সকল ব্যবসায়ী যারা কোনদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতি কিংবা রাজপথে লড়াই করেনি। এরা কারা, এদের সবাইকে চিনি। এরা হচ্ছে সুখের পায়রা। বিপদের সময় এদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। এক এগারোর সময়ও এরা ভোল পাল্টিয়েছিল। এরা দুই দিকেই সুবিধা নেয়। বিএনপির উদ্দেশ্যে করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বগুড়ায় ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনে বিএনপি ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। এখন কী বলবেন?
প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং পরে ডেপুটি স্পিকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার, সরকারি দলের এইচ এন আশিকুর রহমান, বেগম ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি, ইসরাফিল আলম, আবু জাহির, তানভীর ইমাম, মোহাম্মদ শাজাহান মিয়া, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, জাতীয় পার্টির নাসরিন জাহান রতœা, বিএনপির হারুনুর রশীদ প্রমূখ।