পদ্মা নদীর পাড় থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও এর তীরবর্তী শহরকেন্দ্রিক অঞ্চলকে ‘হেরিটেজ’ অঞ্চল ঘোষণার দাবিতে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন করেছে কয়েকটি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।
শুক্রবার বিকেলে ‘রাজশাহীবাসী’ নামের একটি জেলাভিত্তিক সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় এসেছে রাজশাহী দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বসবাসযোগ্য শহর। আর এই শহরটি গড়ে উঠেছে পদ্মা বা গঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করে।
কিন্তু সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে নদীটিকে মেরে ফেলতে চক্রান্ত করা হচ্ছে। উন্নয়নের নামে নদী ভরাটের চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী, এমনকি কোন কোন সরকারী প্রতিষ্ঠান নদীবক্ষে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা করছে।
মানববন্ধনে বলা হয়, বাংলাদেশের এই নদীটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে বয়ে গেছে। এখন কোনভাবে এর স্বাভাবিক গতিতে বিঘ্ন ঘটালে এটি দক্ষিণ পাশে ভারতের দিকে চলে যাবে। তখন আর এটি বাংলাদেশের থাকবে না। এতে করে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনধারা এবং জীববৈচিত্র্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। পানির অভাবে কৃষি ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় ঘড়িয়াল এবং ছয় প্রকারের অতিথি পাখি তাদের আবাসস্থল হারাবে।
যথাযথ সমীক্ষা ছাড়া এই অঞ্চলে কোন উন্নয়ন প্রকল্প না নিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বক্তারা বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা না নিয়ে পদ্মা নদী ধ্বংস করবে এমন কোন উন্নয়ন প্রকল্প আমরা হতে দেব না। নদী দখলের যে কোন প্রচেষ্টাও রুখে দেওয়া হবে।
পদ্মা নদী রক্ষায় সরকারি উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে কোন মূল্যে নদী রক্ষার কথা বলেছেন। তবে কোন কোন মহল এমনকি সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও নদীর স্বাভাবিক গতিধারায় বিঘ্ন ঘটিয়ে প্রকল্প নিচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কথার বাস্তবায়ন চাই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাক্তন ডিজি ম এনামুল হক, ‘পরিচ্ছন্ন রাজশাহী’র আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম সেন্টু, ‘রাজশাহী বাসী’র সদস্য সচির নাজমুল হোসেন রাজু, স্বাধীনতা চর্চা কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান রাজ, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চাই’র আহ্বায়ক আসলাম উদ-দৌলা, লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, ‘রাজশাহীবাসী’র আহ্বায়ক মাহবুব টুংকু। পদ্মা নদী রক্ষায় গত ১৯ শে মে থেকে চলে আসা লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।