রাতুল মন্ডল শ্রীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার হত দরিদ্রদের কর্মসূচির আওতায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য গৃহীত ৪০ দিনের কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে কাওরাইদ ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। ভুয়া প্রকল্পের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই প্রকল্পের উন্নয়নের নামে ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব ও মেম্বাররা ভুয়া প্রকল্প দিয়ে নামেমাত্র কাজ করে টাকা লুটপাট করে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনেক উন্নয়ন প্রকল্প নিবন্ধিত তালিকাভুক্ত শ্রমিক নিয়ে কাঁচা সড়ক ও খালে সামান্য কাজ করেই টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়।
উপজেলা পিআইও সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে ৮ ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসূচিতে প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। এর মধ্যে কাওরাইদ ইউনিয়ন পায় প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। ওই বরাদ্দে গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে থেকে ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নামে মাত্র কাজ শুরু করা হয়।
বিভিন্ন সূত্র থেকে যানাযায়, কাওরাইদ ইউনিয়নের জন্য ২৭৩ জন শ্রমিক প্রতিদিন নিয়োগ করে ৪০ দিনের মধ্যে ইউনিয়নের প্রকল্পের কাজ শেষ করার বিধান রয়েছে। ইউনিয়নে ২৭৩ জন অতি দরিদ্রের তালিকা কর্মসংস্থান প্রকল্পের ওই ৪০ দিনের প্রতিদিন কাজ করতে নিবন্ধন করা হয়।
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধনকৃত অনুমোদিত উপকারভোগীদের পাওনা মজুরি উত্তোলনের সুবিধার্থে ১০ টাকার বিনিময়ে প্রত্যেক শ্রমিকের নামে স্থানীয় জনতা, উত্তরা, কৃষি, সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকসহ বিভিন্ন তফসিল ব্যাংকে হিসাব খোলা হয়েছে। উপজেলা কৃষি, সমাজসেবা, সমবায়, পল্লী উন্নয়ন, মাধ্যমিক শিক্ষা, মৎস্য কর্মকর্তা সহকারী-উপসহকারীদের ওই ইউনিয়নের নিবন্ধনকৃত প্রতিদিনের শ্রমিকদের কাজ তদারক করার ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়। অভিযোগ, ওই ট্যাগ কর্মকর্তারা শ্রমিকদের কাজ মনিটরিং না করে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ভুয়া প্রকল্পের স্বাক্ষর করে লাখ লাখ টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়।
এদিকে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মাস্টাররোলের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সরকারি অতি দরিদ্রদের শ্রম মজুরি পরিশোধ করার কথা থাকলেও ওই ইউনিয়নের তা মানা হচ্ছে না। ভুয়া মাস্টাররোলের শ্রমিকদের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও সদস্যরা যোগসাজশে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে হরিলুট করেছেন। ইউনিয়নের ৪০ দিনের কর্মসূচি অধিকাংশ কাজ না করে চেয়ারম্যান, মেম্বার, টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যায়। কাওরাইদ ইউনিয়নের
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নে কাজ করতে গেলে শতভাগ কাজ করা যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক মেম্বার জানান, এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ঢালী অধিকাংশ ভুয়া প্রকল্প দিয়ে ৪০ দিনের কর্মসূচি নিবন্ধনকৃত শ্রমিক নিয়োগ না করে উপজেলা সুপারভাইজার ও ট্যাগ কর্মকর্তার যোগসাজশে টাকা ভাগাভাগি করে নিয়ে যান। এব্যপারে জানতে চাইলে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারী নাম্বারে ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি