ঢাকা: বয়সসীমা নির্ধারন না করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ছাত্রদলের বিগত কমিটির নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুঁলিয়ে দেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১১ টায় রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ আন্দোলন শুরু করেন সাবেক ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এর আগে সকাল ১০ টা থেকে সাবেক ছাত্র নেতারা নয়াপল্টনের সামনে জড়ো হতে দেখা যায়।
সরজমিনে দেখা গেছে, সকাল সোয়া ১১ টায় নয়াপল্টনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে ১১ টা ২০ মিনিটে কার্যালয়ের সামনে আসেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এবং প্রশিক্ষণ বিষয় সম্পাদক এবিএম মোশারফ হোসেন।
বিএনপির এই চার নেতা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে বাধা দেন সাবেক ছাত্রনেতারা। এ সময় তাদের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের কমিটির বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়।
বিএনপির চার নেতাকে ছাত্রনেতারা বলেন, বয়সসীমা নির্ধারন না করে ছাত্রদলের ধারাবাহিক কমিটি দিতে হবে।
আর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী একাই দু’টি পদ নিয়ে অফিসকেই বাড়িঘর বানিয়েছেন। রিজভীকে এখান থেকে বের করে নিয়ে যান।
এ সময় শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী কার্যালয়ে ভেতরে গিয়ে কথা বলার অনুরোধ করেন। তবে ছাত্রনেতারা বলেন, ভেতরে নয়, এখানেই কথা বলুন।
পরে বরকত উল্লাহ বুলু কার্যালয়ের সামনে থেকে চলে যান। আর মিলন, এ্যানী ও মোশারফ কার্যালয়ে পাশে বইয়ের দোকানে বসতে চাইলে দোকানের সাটার নামিয়ে দেন সাবেক ছাত্রদল নেতারা। এরপর এ্যানী ছাত্রনেতাদের ধমক দিলে এক নেতা তাকে ধাক্কা দেন। এছাড়া বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে ধাক্কাধাক্কি করে বের করে দেন ক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা।
ছাত্রনেতাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক শেষে সাংবাদিকদেরকে ফজলুল হক মিলন বলেন, কমিটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দল থেকে দেয়া হয়েছে। আর আমরা সবাই বসে এটা কার্যকর করবো। তবে দুঃখ ও অভিমান থাকতেই পারে। এটা অস্বাভাবিক কোন ঘটনা না। আর তাদের দুঃখ ও বেদনা আমরা শুনবো। সেটা আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বলবো।
গত ৩রা জুন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কেন্দ্রীয় কমিটি বাতিল করা হয়। এতে বলা হয়, আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলদের মতামতের ভিত্তিতে সংগঠনটির নতুন কেন্দ্রীয় সংসদ গঠন করা হবে।
ছাত্রদলের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতার বিষয়ে বিজ্ঞপ্ততিতে জানানো হয়, ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে হবে। কেবল ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যে কোনো বছরে এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
সাবেক নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে বয়সের কোন সীমারেখা নির্ধারণ না করে স্বল্পমেয়াদে আগামী ১লা জানুয়ারি পর্যন্ত একটি কমিটি গঠন এবং পরের কমিটিকেও এক বছরের স্বল্পমেয়াদে গঠন করে ছাত্রদলের নেতৃত্বের জট কমানোর দাবি করেছেন। কিন্তু বিএনপির শীর্ষ নেতারা তাদের সেই দাবিকে অগ্রাহ্য করে নানান শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। সিন্ডিকেটের পছন্দের নেতাকে সামনে আনার জন্য তারা এ ধরণের শর্ত দিয়েছেন বলেও অভিযোগ ছাত্রনেতাদের।