ডেস্ক: নাজিলা ট্রিনডেডে’কে ধর্ষণ করেছেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার, বিশ্বখ্যাত নেইমার জুনিয়র। নাজিলা তার শিকারে পরিণত হয়েছেন। একজন নেইমারের চেয়ে কি ব্রাজিলে আর কোনো কিছুই গুরুত্বপূর্ণ নয়? সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন নাজিলা ট্রিনডেডের আইনজীবী ডানিলো গারসিয়া ডি আনড্রেডে। ওদিকে নতুন এক অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে বলা হয়েছে, নাজিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক আছে এই আইনজীবীর। এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। বলেছেন, আমার মক্কেলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক শুধু অপরাধ বিষয়ে তার পক্ষ অবলম্বন করা।
শুক্রবার নাজিলাকে প্রায় ৬ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
সেখান থেকে তাকে পাঁজাকোলা করে বের করে আনেন এই আইনজীবী। যেভাবে তাকে তিনি কোলে করে নিয়ে এসেছেন, তাতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন তাদের দু’জনের সম্পর্ক নিয়ে। শুক্রবার ওই শুনানির পর আইনজীবী ডানিলো গারসিয়া বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় নাজিলা অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। তিনি নিজের মাথায় আঘাত করেছিলেন। সেখান থেকে নাজিলাকে কোলে করে তিনি যখন গাড়ির উদ্দেশে বের হন তখন সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের ‘শত্রুতামুলক’ আচরণের সমালোচনা করেন তিনি। নাজিলাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে এক ঘন্টা পরে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
সিএনএনকে দেয়া দীর্ঘ সাক্ষাতকারে নাজিলার পক্ষে আবেগঘন যুক্তিতর্ক উত্থাপন করেছেন ডানিলো গারসিয়া। বলেছেন, তার মক্কেলকে ধর্ষণ করা হয়েছে। যদি নেইমার নিরাপরাধ হয়, তাহলে পুলিশকে বলুন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করতে। কিন্তু সেটা মানবীয় এবং আইনসম্মত হতে হবে। গত ১৫ই মে প্যারিসের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ব্রাজিলের যুবতী মডেল নাজিলাকে বিশ্বসেরা ফুটবলার নেইমার জুনিয়র ধর্ষণ করেন বলে তার অভিযোগ। এর স্বপক্ষে প্রমাণ হিসেবে একটি ভিডিও-ও প্রকাশ করা হয়েছে।
সিএনএন’কে আইনজীবী ডানিলো গারসিয়া বলেছেন, নাজিলার সাহায্য প্রয়োজন। একজন আইনজীবী হিসেবে আমি বলবো, তাকে ধর্ষণ করা হোক অথবা না হোক, তার বক্তব্যকে আমার বিশ্বাস করতেই হবে। তার যে আইনি সহায়তা প্রয়োজন সে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায় না। শুক্রবারে সাংবাদিক ও অন্যদের বিরক্তির জবাবে তিনি বলেন, আমি মানবতার যে অভাব রয়েছে তা দেখতে পেয়েছি।
এ বিষয়ে নেইমারের আইনজীবীদের মন্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করেছে সিএনএন। জবাবে নেইমারের মুখপাত্র ডে ক্রেসপো বলেছেন, পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া গোপনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, রিও ডি জেনিরো পুলিশের প্রেস অফিসের মতে, ব্রাজিলে দুটি আলাদা পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি নেইমার। একটি তদন্ত করছে সাও পাওলো পুলিশ। সেখানে নাজিলা গত ৩১ মে নেইমারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাতে তিনি দাবি করেছেন সেইন্ট জার্মেইনের খেলোয়াড় নেইমার তাকে ওই মাসেই অপদস্ত ও ধর্ষণ করেছেন। তবে ইন্সটাগ্রামে এক ভিডিওতে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন নেইমার।
নাজিলার অভিযোগের জবাবে তিনি বলেছেন, আমাকে এটা (শারীরিক সম্পর্ক) করতে প্রলুব্ধ করা হয়েছে। যা ঘটেছে, তা ছিল একটি ফাঁদ। আর সেই ফাঁদে আমি পা দিয়েছিলাম। কিন্তু তা থেকে একটি শিক্ষা পেয়েছি। তার প্রতিনিধিরা বলেছেন, উৎকোচ আদায়ের ফাঁদে পড়ে শিকারে পরিণত হয়েছেন নেইমার। তবে ওই ভিডিওটি তারপর থেকেই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।
কিন্তু নেইমার অভিযোগ অস্বীকার করার দু’দিন পরে ইন্সটাগ্রামের ওই ভিডিও পোস্ট করার কারণে এবং তা প্রত্যাহার করার কারণে তার বিরুদ্ধে সাইবার ক্রাইমের আওতায় তদন্ত হচ্ছে। এই তদন্তে নাজিলার সঙ্গে তার যে রগরগে টেক্সট ম্যাসেজ বিনিময় হয়েছে তা নিয়েও যাচাই করে দেখছে পুলিশ। ওইসব টেক্সট ম্যাসেজে রয়েছে মডেল নাজিলার স্পর্শকাতর অনেক ছবি। ব্রাজিলের আইনে অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ ছবি পোস্ট করা একটি অপরাধ। তাই রিও ডি জেনিরো পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। কারণ, নেইমার ওইসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। এ সময় তিনি রিও ডি জেনিরোতে ব্রাজিল জাতীয় দলের প্রশিক্ষণে ছিলেন।
রিও ডি জেনিরোতে বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন নেইমার জুনিয়র। এ সাক্ষ্য সাইবার ক্রাইম মামলার। তার আইনজীবী মারিয়া ফার্নান্দেজ নিশ্চিত করেছেন এ বিষয়ে। ওই শুনানিতে একটি হুইল চেয়ারে করে হাজির হন নেইমার। এরপর তিনি বলেন, বিশ্ববাসী, আমার বন্ধুবান্ধব, আমার ভক্তরা আমাকে সমর্থন জানিয়ে যে বার্তা পাঠিয়েছেন তাদের প্রশংসা করি আমি। এতে প্রমাণ হয়েছে বিশ্ব আমার সঙ্গে আছে। আমার শুভাকাঙ্খীদের বলতে চাই ধন্যবাদ। আমি আরও বলতে চাই, আমি ভীষণ প্রীত হয়েছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ।