‘দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়’ বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান। তিনি বলেন, এখানে এত বেশি দুর্নীতি রয়েছে যে বলার ভাষা নেই। এ দুটি প্রতিষ্ঠানে দেশের সব শিক্ষিত মানুষ কাজ করেন। তারা আইন মানতে চান না। তারা বাইন মাছের মতো পিছলে যান। তাদের ছাই দিয়ে ধরতে হবে, যাতে পিছলে যেতে না পারেন।
বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, কমিউনিটি পুলিশিং ফোরাম ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্নীতি প্রতিরোধ-সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দুদক চেয়ারম্যান।
দুদকের মামলার দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মামলা দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে ডকুমেন্ট না পাওয়ার কারণে। আইনি সীমাবদ্ধতাও আছে।’
আইন মন্ত্রণালয় দুদক আইন গতিশীল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
দুদক চেয়ারম্যান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘দেশের কতিপয় সচিব মুক্তিযোদ্ধা সনদ জালিয়াতি করে দেশকে এবং দেশের মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করেছেন। তাদের অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন সনদ জালিয়াতি ধরা পড়ায়।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘হলমার্কসহ দেশের বড় দুর্নীতির মামলাগুলো পরিচালনা করার জন্য দেশের বড় আইনজীবীদের আমরা আমাদের পাশে পাই না। কারণ আমরা তাদের পারিশ্রমিক ঠিকমতো দিতে পারি না। এ কারণে দেশের বড় বড় আইনজীবী আসামিদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের ৫টি জেলায় পাবলিক হেয়ারিং বা গণশুনানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ সব শুনানিতে দেশের সকল সরকারি কর্মকর্তা জনগণের প্রশ্নের জবাব দেবেন।’
খুব শিগগিরই রংপুরে এই গণশুনানির আয়োজন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রংপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শিক্ষাবিদ মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন, কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্যসচিব সুশান্ত ভৌমিক, সদস্য অধ্যক্ষ খন্দকার আবুল হাসনাত ফখরুল আনাম, সাংবাদিক আফতাব হোসেন, সংগীত পরিচালক খাদেমুল ইসলাম বসুরিয়া, অ্যাডভোকেট চৈতী প্রমুখ।