দিনাজপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এখনো উপচেপড়া ভিড়। একঘেয়েমি জীবন থেকে বেরিয়ে একটু প্রশান্তির খোঁজে অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছেন বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে।
বিনোদন পিপাসুদের স্বাগত জানাতে রঙিন সাজে সেজেছে দিনাজপুরের সিটিপার্ক, মায়াবী স্বপ্নময় ভুবন স্বপ্নপুরীসহ রামসাগর, মোহনপুরের রাবার ড্যাম, বড়মাঠের ঈদ আনন্দ মেলা, নবাবগঞ্জের আশুড়ার বিলে শেখ ফজিলাতুন্নেছা কাঠের সেতু, বীরগঞ্জের সিংড়া ফরেস্টসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র।
দিনাজপুর সিটি পার্কের দেয়ালে ও বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত মুর্যালে এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এখানে রয়েছে বিভিন্ন পশু পাখির অবিকল ভাস্কর্য, ইলেকট্রিক দোলনা, নাগরদোলা, ট্রেন,এ্যাকুরিয়াম।
এদিকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ঐতিহাসিক রামসাগর। এখানে রামসাগর ঘেষা কৃত্রিম পাহাড়ি প্রাকৃতিক পরিবেশ, রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা।
যেখানে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় নীল গাই, চিত্রা হরিণ, অজগর সাপ ও বিভিন্ন পাখি। এছাড়াও শহরের বড় ময়দানের ঈদ আনন্দ মেলায় রয়েছে বিভিন্ন রাইড, যা সকলের উপভোগ্য হয়ে উঠেছে।
উত্তরবঙ্গের চিত্ত বিনোদনে সবাই ভীড় জমায় দিনাজপুর শহর থেকে ৫২ কিলোমিটার দরে নবাবগঞ্জ উপজেলার স্বপ্নপুরী বিনোদন কেন্দ্রে। এখানে স্বাগত জানাবে দণ্ডায়মান দুটি বিশাল আকৃতির পরীর প্রতিকৃতি মূর্তি। দুটি পরী তাদের দু’ডানা প্রসারিত করে ও একহাত উঁচু করে গেটের দু’পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গেট পেরিয়ে পথের দু’ধারে বিভিন্ন গাছের সমারোহ। চোখে পড়বে পথের দু’ধারে সারি সারি দেবদারু গাছ। আবার নারিকেল গাছের সারি।
স্বপ্নপুরীতে রয়েছে কৃত্রিম পশু দুনিয়া। প্রবেশ পথে দুটি ড্রাগন। সামনেই পথ জুড়ে হাঁ করা নর-করোটির মুখের ভেতর দিয়েই মূল পশু দুনিয়ার পৌঁছাতে হবে। এখানে রয়েছে কৃত্রিম পাহাড় ও ঝর্ণা। ঝরণার পানি গড়িয়ে একটি ছোট জলাশয়ে পড়ছে। অবসর যাপনের জন্য রয়েছে একাধিক মনোমুগ্ধকর ডাকবাংলা।
এছাড়াও নবাবগঞ্জের শেখ রাসেল জাতীয় উদ্যান এবং আশুড়ার বিলকে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ বাড়াতে আশুড়ার বিলের উপর আঁকাবাঁকা দৃষ্টি নন্দন শেখ ফজিলাতুন্নেছা কাঠের সেতু। ঈদের দিন থেকেই ৯০০ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট কাঠের সেতুটি এখন হাজারো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। উদ্যানটি হয়ে উঠেছে সব বয়স, সব শ্রেণির মানুষের মিলনমেলায়।
পর্যটকদের আর্কষণ বাড়াতে আশুড়ার বিলে নামমাত্র টাকা নিয়ে চালানো হচ্ছে নৌকা। জাতীয় উদ্যানের ভেতরে বিশাল শাল বন ছাড়াও আশুড়ার বিল, সীতার কোট বিহার ও বাল্মিকী মনির থান অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মনমাতানো নান্দনিক এই বিলটিতে বর্ষা মৌসুমে দেশি প্রজাতির মাছ, হারিয়ে যাওয়া জাতীয় শাপলা ফুলের চাষ করা হচ্ছে। জাতীয় উদ্যানের শাল গাছে পাখির অভয়াশ্রমের জন্য মাটির হাঁড়ি ঝুলিয়ে পাখির আবাসস্থান রয়েছে। পাখির কলরব, শালবন আর বিলের উপর কাঠের সেতু পর্যটকদের মুগ্ধ করেছে।