এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সেনাবাহিনীর প্রতীক লাগানো গ্লাভস পরে উইকেটকিপিং করতে দেখা গেছে ভারতের মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের ৪০তম ওভারে প্রথম টেলিভিশন ক্যামেরার সৌজন্যে ওই গ্লাভস নজরে পড়ে সকলের। পরে আইসিসি বিসিসিআইকে জানায়, ধোনির গ্লাভস থেকে ওই টিহ্ন সরিয়ে ফেলতে হবে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইসিসির এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা।
গত দুদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যখন উত্তপ্ত তখন পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মাঠে নামাজ পড়ার একটি ছবি সামনে আনা হচ্ছে।
সময়টা ৩০ মার্চ, ২০১১। মোহালিতে ভারতের বিরুদ্ধে খেলার আগে মাঠেই নামাজ পড়েছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা।
আইসিসি তা নিয়ে কখনও কোনও আপত্তি তোলেনি। বরং নেটিজেনদের একাংশ পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সেই পুরনো ছবি সেই সময় ভাইরাল হয়েছিল। আরও একবার আট বছর আগের সেই ছবি প্রকাশ্যে আসছে।
আর সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন খোদ এক পাকিস্তানি লেখক। নাম তারেক ফতেহ। পাকিস্তানি লেখক হলেও অবশ্য দেশ থেকে তিনি বিতাড়িত। এখন তিনি কানাডায় বসবাসকারী। বরাবরই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন তিনি। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে পাকিস্তানি অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ পাঞ্জাবি-পাজামার উপর ব্লেজার চাপিয়ে বাকিংহাম প্যালেসে রানির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তা নিয়েও আপত্তি প্রকাশ করেছিলেন তারেক ফতেহ। তার মতে, রানির মহলে ওরকম পোশাক পরে যাওয়াটা নিয়মবিরুদ্ধ। এবার সেই তারেক ফতেহ বলছেন, পাকিস্তান দল মাঠে নামাজ পড়লে আইসিসি আপত্তি জানায় না। কিন্তু ধোনি গ্লাভসে সেনাবাহিনীর প্রতীক লাগালে সমস্যা!
জি নিউজের খবর, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-এর নিয়ম অনুযায়ী, আইসিসি-র আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ক্রিকেটাররা যে পোশাক পরবেন বা যে কিট ব্যবহার করবেন সেখানে এমন কোনও বার্তা থাকবে না যা রাজনীতি, ধর্ম কিংবা জাতিগত বার্তা বহন করে। তাই আইসিসি-র ধোনির সেই ব্যাজ নিয়ে আপত্তি। কিন্তু পাকিস্তান দলের মাঠে নামাজ পড়াটাও তো তা হলে খেলার মাঠে ধর্মীয় বার্তা বহন করে। তা হলে সেখানে আপত্তি ওঠে না কেন! প্রশ্ন তুলেছেন তারেক।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাম্মানিক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র সিং ধোনি। বরাবরই তিনি ভারতীয় সেনার প্রতি আবেগপ্রবণ। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আর্মি ক্যাপ পরে খেলেছিল ভারতীয় দল। সেই আইডিয়া ধোনিরই মস্তিষ্কপ্রসূত। বুধবার সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ধোনির কিপিং গ্লাভসের উপরে ডানাওয়ালা ছুরি প্রতীক চিহ্ন দেখা যায়। যাকে সেনাবাহিনীর পরিভাষায় যাকে বলা হয়, ফ্লাইং ড্যাগার। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্যারা স্পেশ্যাল ফোর্সের প্রতীক এই ফ্লাইং ড্যাগার। ফেলুকাওয়াকে স্টাম্পিং করার সময় সেই ফ্লাইং ড্যাগার আরও স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এরপরই বিতর্ক শুরু হয়।