প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে রাঙামাটিতে। কিন্তু এবার বৃষ্টিতে নয়, পাহাড় কেটে মাটি চাপা পড়ে প্রাণ হারালো তিনজন। আহত হয়েছে আরও দু’জন। এঘটনায় পুরো রাঙামাটি জেলায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলছেন, বার বার সর্তক করার পরও যারা এখনও গোপনে পাহাড় কেটে বসত ঘর নির্মাণ করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আর যারা এখনো ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এরই মধ্যে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ দখলদারদের উচ্ছেদ উভিযান শুরু করা হয়েছে। যারা কাপ্তাই হ্রদের জমি কিংবা পাড় দখল করে আছে তাদের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
এদিকে গত রবিবার রাঙামাটি শহরের মহিলা কলেজ গেইট এলাকায় পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণের জন্য গর্ত করতে গিয়ে তিন শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনায় চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. নজরুল ইসলামকে আহবায়ক করে রাঙামাটি জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সানাউল্লাহ ও রাঙামাটি পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানকে সদস্য করা হয়। চার সদস্য বিশিষ্ট এ তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক।
এছাড়া মাটি চাপা পরে চার শ্রমিকের মৃত্যু ও অবৈধভাবে ইমারত নির্মাণে দায়ে স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পারভীন আকতারের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ব্যাপারে রাঙামাটি কোতয়ালী থানার কর্মকর্তা ওসি মীর জাহিদুল ইসলাম রনি জানান, পাহাড় কেটে আমারত ও অবৈধ বিল্ডিং নির্মাণের অপরাধে বাড়িরমালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এরই মধ্যে পুলিশ পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখেছে।
উল্লেখ্য, রাঙামাটি শহরের মহিলা কলেজ এলাকায় পাহাড় কেটে বসত বাড়ির গর্ত করার সময় মাটি চাপা পড়ে নির্মাণ শ্রমিক আঙ্গুর আলী (৬৫), সেন্টু মিয়া (৪০) ও মো. পাপ্পু মিয়ার (১৮) মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আহত হয় সবুজ মিয়া (৭০) ও মো. সাইফুল (৫৫)।
এদের মধ্যে গুরুত্বর আহত সবুজ মিয়াকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নেয়া হয়েছে।