গাজীপুর: পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দেয়া পুরাতন মিটার পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটার দেয়ার পর থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মিটার ভাড়া ৪গুণ বৃদ্ধির পাশাপাশি একই ব্যবহারের বিল কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠে গেছে গ্রাহকদের। তারা প্রতিনিয়তই বিদ্যুৎ গেলো গেলো বলে আতঙ্কে থাকছেন, কারণ কখন যেন বিদ্যুৎ চলে যায়। এই নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে চরম হতাশা ও উত্তাপ দেখা দেয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসিক বিল সিস্টেম মিটারের যে বিল হত মাসে, এখন সে বিল হচ্ছে দ্বিগুণ বা তিনগুণ। গ্রাহকেরা মাসিক বিল পরিশোধ করতে আগে ব্যস্ত থাকতেন মাসে একবার। এখন বিলের মাত্রা কয়েকগুণ হলেও ব্যস্ত থাকেন সব সময়। কারণ কখন টাকা শেষে বিদ্যুৎ অফ হয়ে যায়। প্রিপেইড মিটারে অতিরিক্ত বিল হওয়ায় বিশেষ করে স্বল্প আয়ের জেনগোষ্ঠির মাসিক খরচ অনেক বেড়ে গেছে, যা তার আয়ের সাথে পাল্লা দিচ্ছে। ফলে প্রিপেইড মিটারের দ্বারা নির্যাতিত বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা এখন পরিত্রানের পথ খুঁজছেন। কোন রাস্তা না পেয়ে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরণের পোষ্ট দিচ্ছেন। প্রতিবাদ করছেন, আপন বলয়ে।
এই বিষয়ে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ছায়াবীথী জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নিজাম উদ্দিন বলেন,প্রিপেইড মিটারের ভাড়া চারগুণ সত্য। আগে ছিল প্রতিমাসে ১০টাকা। মিটার প্রিপেইড হওয়ার ফলে এই মাসিক ভাড়া হয়ে গেছে ৪০টাকা। কেন এই বেশী ভাড়া এই বিষয়ে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি দাবী করেছেন, মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত মতেই প্রিপেইড মিটারের ভাড়া মাসিক ৪০টাকা করে নেয়া হচ্ছে। ডিজিএম বলেন, বেশী বিল হওয়ার কথা না। তবে কোন গ্রাহকের প্রিপেইড মিটারে বেশী খরচ হচ্ছে মনে করলে গ্রাহক বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে আমরা ২’শ টাকা ফি নিয়ে মিটার নিউট্রাল করে দেই। কারণ অনেক বাসায় অনেক মিটারের একটিই নিউট্রাল। ফলে কোন মিটারে বিদ্যুৎ খরচ বন্ধ থাকলেও অনেক মিটারে একটি নিউট্রাল থাকলে সব মিটারেই বিদ্যুৎ খরচ হবে। এতেও বিল বেশী হতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এনালগ মিটার থেকে ডিজিটাল মিটারে আসতে গ্রাহকের টাকা খরচ হয়েছে। এখন ডিজিটাল থেকে প্রিপেইড মিটারে আসতে গিয়ে কয়েক গুণ ভাড়া ও বেশী করে বিল দিতে হচ্ছে। এখন আবার মিটার প্রতি ২’শ টাকা দিয়ে নিউট্রাল করতে হলে গ্রাহকের জীবন শেষ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ পেতে নাগরিকদের হয়রাণী ও প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে সরকারের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।