তেল বিপর্যয়ের ১১ দিন পর পূর্ব সুন্দরবনের পানি ও বনের পরিবেশ স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। স্থানীয় জেলেরা শ্যালা নদী এবং খালগুলোতে কাঁকড়া ও মাছ ধরা শুরু করেছেন। বন বিভাগরে দাবি ‘ওটি সাউদার্ন স্টার সেভেন’ নামক ট্যাংকার থেকে পানিতে ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস অয়েলের অধিকাংশই তুলে ফেলা হয়েছে। বাকিটুকু জোয়ার ভাটার টানে সরে যাবে।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে সুন্দরবন নিয়ে আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে গত ৯ ডিসেম্বর ফার্নেস অয়েলবাহী ট্যাংকার দুর্ঘটনার পর বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনটির ওপর বড় ধরনের আঘাত আসে। শঙ্কা তৈরি হয় এর জীব-বৈচিত্র্য ও খাদ্য-শৃঙ্খলের ভবিষ্যৎ অস্তিত্ব নিয়ে। বর্তমানে এ বন নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দুর্ঘটনার ১১দিন পর বন বিভাগের দাবি, নদী ও খালের পানি ৯৫ ভাগ তেলমুক্ত হয়েছে। অপরদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলছেন, আপাতত পরিস্থিতি মোকাবেলা করা গেলেও এ বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবন চাঁদপাই রেঞ্জের রেঞ্জ বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘প্রায় ১ লাখ লিটার তেল নদী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে, তাই এক্ষেত্রে অভিযান সফলই বলতে হবে। এখন নদীতে কিছু নেই।’
খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড.আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা পানিতে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা পেয়েছি, যা কোনো জলজ প্রাণির জন্য ক্ষতিকর নয়। উপকূলীয় এলাকার প্রাণিরা প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে। তাই, এক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
স্থানীয় জেলেরা বলছেন, দুর্ঘটনার পর পানির যে কালো রঙ ছিলো সে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে পানি পরিষ্কার হয়েছে।
স্থানীয় একজন জেলে বলেন, ‘আগে যে তেল ভাসতে দেখা যেত, তা আর এখন দেখা যাচ্ছে না; তবে গাছে লেগে থাকা তেল এখনও আছে।’
এদিকে, দুর্ঘটনার দশ দিন পর থেকে শ্যালা নদী ও খালে জাল ফেলা শুরু করেছে স্থানীয় জেলেরা। ভরা মৌসুম শুরু হলে মাছ ও কাঁকড়া ধরা পড়বে বলে আশাবাদী তারা।
জেলেরা জানালেন, এখন কিছু মাছ-কাঁকড়া পাওয়া যাচ্ছে, তবে কয়েকদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি আগের মতো হয়ে আসবে।