বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার: ছাত্রলীগের নব গঠিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া বিতর্কিত ৯৯ জনের তালিকা প্রকাশ করেছেন পদবঞ্চিত নেতারা। বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক বিতর্কিত সবাইকে সংগঠন থেকে বিতাড়নের দাবি জানান।
পদবঞ্চিতদের ভাষায় এরা সংগঠনের টিউমার, যা এক সময় ক্যান্সারে পরিণত হবে। এদিকে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে আবারো মাদকাসক্ত দাবি করে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডোপ টেস্ট করানোর দাবি করেছেন পদবঞ্চিতরা। তারা বলেন, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, গঠনতন্ত্র বহির্ভূত ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ হতে পারে না। ছাত্রলীগ আদর্শের সংগঠন, অপকর্মকারীদের অভয়ারণ্য নয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে গত ১৩ই মে মধুর ক্যান্টিনে পদ বঞ্চিতদের সংবাদ সম্মেলনে হামলা ও নারী লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িতদের ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সাবেক প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু। নবগঠিত কমিটিতে স্থান পাওয়া বিবাহিত, বিএনপি-জামাত পরিবারের সন্তান, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, হত্যা মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বয়সোত্তীর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক তিলোত্তমা শিকদার, জসিম উদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান, বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন রহমান, কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা পারভীনসহ শতাধিক পদবঞ্চিত নেতা। সাইফউদ্দিন বাবু বলেন, তিনদিন আগে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে, যা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। সেসব ত্রুটির বিরোধিতা করে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু সেদিন আমাদের ভাই-বোনদের মেরে জখম করা হয়েছে। অনেককে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগে প্রত্যেক নেতাকর্মীর কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। পদ-পদবী পাওয়ার পর একজন কর্মী যেমন আনন্দ-উল্লাস করতে পারে, তেমনি দীর্ঘদিন পর গঠিত কমিটিতে পদায়ন না হলে তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরতœ শেখ হাসিনার প্রতি বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে একটি অর্থবহ ও সুন্দর কমিটি উপহার দেয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছিলাম। প্রাণপ্রিয় নেত্রী ইতোমধ্যেই বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা শেখ হাসিনার যে কোনো সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত। তবে, কমিটি পুনর্গঠনের নামে যদি ফের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করা হয়, তাহলে এর যথোপযুক্ত জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত। সাইফ বাবু বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বারবার একটি কথাই বলেন যে, ছাত্রলীগের কমিটি চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। চুলচেরা বিশ্লেষণের পরও যদি তারা ১৭ জনের নাম পায়, তাহলে আরেকটু বিশ্লেষণ করলে সেটা একশর বেশি হতে পারে। তাই বিতর্কিত ১৭জন নয়, আরও বেশি হবে। ‘ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও মাদকাসক্ত আপনাদের এ তথ্যের সত্যতা কি’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, গোলাম রাব্বানী যে মাদকাসক্ত এমন অনেক ভিডিও ইউটিউবে আছে। আমাদের কাছেও সব তথ্য প্রমাণ আছে। তিনি বলেন, আমরা সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ডোপ টেস্ট করানোর দাবি করছি।