ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে ‘বিতর্কিত’দের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেতা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ আজ বুধবার দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে গণভবনে ডেকে এ নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা৷
রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কমিটি থেকে ‘বিতর্কিত’দের বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি করে ‘বিতর্কিত’দের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
ছাত্রলীগের সভাপতি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ‘বিতর্কিত’দের ব্যাপারে ওঠা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করার নির্দেশ দিয়েছেন। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে, তাঁদের সংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি৷ যাঁদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা আছে, যাঁরা বিবাহিত, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যাঁদের সংশ্লিষ্টতা আছে কিংবা যাঁদের পরিবার বিএনপি-জামায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাঁদেরও কমিটি থেকে অব্যাহতি দিতে বলেছেন তিনি৷
ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি প্রকাশের প্রায় ১০ মাস পর গত সোমবার সংগঠনের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়৷ ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না-পাওয়া ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে সংগঠনের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালান৷ এতে কয়েকজন নারী নেত্রীসহ ১০-১২ জন আহত হন৷
ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত বিক্ষুব্ধ সেই অংশটি ইতিমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ‘বিতর্কিত’দের কমিটি থেকে বাদ দিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন৷ সেই আলটিমেটামের সময়সীমা শেষ হচ্ছে কাল বৃহস্পতিবার৷ এই সময়ের মধ্যে ‘বিতর্কিত’দের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া না হলে তাঁরা গণপদত্যাগ কিংবা অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন৷
জানতে চাইলে নতুন কমিটিতে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের বিগত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিতর্কিতদের বাদ দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের বিষয়টি তাঁরা জানতে পেরেছেন৷ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আজ বুধবার রাতে তাঁরা তাঁদের অবস্থান জানাবেন৷
গত বছরের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের প্রায় আড়াই মাস পর ৩১ জুলাই রেজওয়ানুল হক চৌধুরীকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য পদগুলো ছিল ফাঁকা। গত সোমবার বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পদবঞ্চিত নেতাদের ওপর ওই হামলা নিয়ে রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হয়। বিশেষ করে নারী নেত্রীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা নিয়ে নিন্দা জানান সংগঠনটির সাবেক নেতারা। কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামানের ছেলে আশিক খানের সহসম্পাদক পদ পাওয়ার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা চলছে।