চট্টগ্রাম: আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে যেসব সাংসদ নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করেছেন, তাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযুক্ত হবেন।
আজ শনিবার চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম নগর, মহানগর উত্তর, মহানগর দক্ষিণ, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অতিথিদের বক্তব্যের আগে বিভিন্ন জেলার নেতারা নিজ জেলার সাংগঠনিক অবস্থা তুলে ধরেন। এ সময় কেউ কেউ স্থানীয় সাংসদদের সঙ্গে এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ কম বলে অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাচনে অনেক সাংসদ দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বলেও জেলার দু-একজন নেতা অভিযোগ করেন। এর জবাবে হানিফ এ কথা বলেন।
নেতা-কর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে হানিফ বলেন, সাংসদের সঙ্গে অনেক উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের দূরত্ব রয়েছে। দূরত্ব মিটিয়ে ফেলেন। মঙ্গল হবে। সাংসদ হিসেবে যেসব বরাদ্দ আসে, তা বিতরণে দলীয় নেতা-কর্মীদেরও সম্পৃক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ভরাডুবির কথা ভেবে আসেনি। তাই অনেক জায়গায় নৌকার বিপক্ষে দলীয় প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা ভেবে এই সুযোগ দেওয়া হয়। ভোটাররা যাতে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থী বাছাই করতে পারেন। তবে দলের সাংসদ হয়ে নৌকার বিপক্ষের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে অভিযুক্ত হবেন।
অনুষ্ঠানে রাঙামাটি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর অভিযোগ করেন, পাহাড়ের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, ‘রাঙামাটির বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। সেটা সরকারও জানে। এখানে শুধু আঞ্চলিক দলগুলোর সমস্যা নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিও রয়েছে এর পেছনে। সরকার এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’
প্রধান অতিথি আবদুল মতিন খসরু বলেন, আওয়ামী লীগে কোনো গুন্ডাপান্ডা দরকার নেই। নেতার অভাব নেই। যারা কাজ করবে না, তাদের সংগঠনে দরকার নেই। রাজনীতি করতে হলে নিরহংকার হতে হবে। তিনি বলেন, প্রবীণ নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে। নতুন কর্মী সংগ্রহের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তাদের সদস্য করতে হবে। সম্মেলনের প্রস্তুতি নেন। একটি কমিটি ১০ থেকে ১২ বছর চলতে পারে না।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দল ও সরকারের মধ্যে সমন্বয় দরকার। দলের নেতা-কর্মীদের গঠনতন্ত্র জানতে হবে। পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে সম্মেলন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর কথাও মাথায় রাখতে হবে।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ আবদুল মতিন খসরু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।