কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বাকি তিন দফার ভোটে সব বুথে কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের প্রথম তিন দফা ভোটে সেসব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ না করা নিয়ে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এমনকি নির্বাচন কমিশনের সামনে ধরণাতেও বসেছেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের ঠিকমত ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিজেপিও। গত তিন দফার ভোটে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক অশান্তি হয়েছে। বিশেষ করে যে সব বুথে রাজ্য পুলিশ দিয়ে নির্বাচন হয়েছে সেখানেই গোলমাল হয়েছে সবচেয়ে বেশি বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এক জনের মৃত্যুও হয়েছে। সর্বশেষ চতুর্থ দফায় ৯৬ শতাংশ বুথে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন ছিল বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল।
রাজ্যে প্রথম দফায় মাত্র ৫০ শতাংশ, দ্বিতীয় দফায় ৭৫ শতাংশ ও তৃতীয় দফায় ৯২ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার তা একশ শতাংশ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। সোমবার পঞ্চম দফায় রাজ্যের যে সাতটি আসনে ভোট হবে সেখানে ৫৭৮ কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এই দফায় ভোট নেওয়া হবে, বারাকপুর, বনগাঁ, হাওড়া, উলবেরিয়া, হুগলী, আরামবাগ ও শ্রীরামপুর লোকসভা আসনে। পঞ্চম দফা ভোটে অতিসংবেদনশীল কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে ব্যারাকপুরের নাম। সূত্রের খবর, শনিবার ব্যারাকপুর সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে রাজ্যের ৭ পর্যবেক্ষককে। এদিন ভিডিও কনফারেন্সে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সিদ্ধিনাথ গুপ্তা, বিবেক দুবে-সহ সাতজন পর্যবেক্ষক। পশ্চিমবঙ্গের জন্য নিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানিয়েছেন, একশ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয বাহিনী থাকার ফলে নির্বাচন পরিচালনায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা হবে খুবই সীমিত। নাজ্য পুলিশ থাকবে ভোট কেন্দ্রের বাইরে। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলা হয়েছে বুথের মধ্যে তারা যাবেন না। তারা থাকবেন বাইরে। বুথের ভিতরের দায়িত্ব থাকবে প্রিজাইডিং অফিসারের উপর। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক বলেছেন, রাজ্যে ভোটে যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করা হচ্ছে তার সঙ্গে একমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরের মিল রয়েছে। তবে এবারই প্রথম বিরোধী দলগুলির পাশাপাশি ভোট কর্মীরাও নিরাপত্তার দাবিতে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের আরজি জানিয়েছিল। গত চার দফার ভোটে অনেক ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটাররা কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকায় ভোট দিতেও অস্বীকার করেছেন। পথ অবরোধও করেছেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতরা অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপির হয়ে কাজ করছে। এমনকি ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা প্রভাবিত করছেন বলে নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছেন তারা।