ঢাকা: প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে তোলপাড় চলছে ভারতে। তার সাবেক একজন সহকর্মী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন। এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনি বলেছেন, এমন অভিযোগে বিচার বিভাগ হুমকির মুখে। তার দাবি এ অভিযোগের নেপথ্যে রয়েছে কোনো ষড়যন্ত্র। তার ভাষায়, এর নেপথ্যে বড় কোনো শক্তি আছে। তারা প্রধান বিচারপতির পদটির কর্মতৎপরতা বন্ধ করতে চায়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
তবে অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ করা হয় নি।
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, স্বাধীন বিচারবিভাগ হুমকির মুখে। একে বলিরপাঁঠা বানানো যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারকের কাছে এফিডেভিটের মাধ্যমে সাবেক ওই সহকর্মী যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ একটি বেঞ্চে এ নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শনিবার শুনানি হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত জানান নি বেঞ্চ।
তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের নেতৃেত্ব রয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনি শুনানিতে বলেছেন, এই ঘটনা অবিশ্বাস্য। আমার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করার মতো নিচে নামাও উচিত নয়। এ বিষয়ে তিনি কোনো অর্ডার দেবেন না বলে জানান। ফলে সবচেয়ে সিনিয়র বিচারক অরুণ মিশ্র এ মামলার পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন।
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা বানোয়াট এবং এটা এমন এক সময়ে আনা হয়েছে যখন আগামী সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোর শুনানি হবে। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আমিই এই চেয়ারে বসবো। কোনো ভীতি ছাড়াই আমার বিচারিক কার্যক্রম চালিয়ে রায় দেবো। বিষয়টি অনেক দূর গড়িয়েছে।
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে যেহেতু কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই, তাই লোকজন কিছু খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে। আর তারা এটাই খুঁজে পেয়েছে। ২০ বছর আত্মনিবেদিত একজন বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর আমার ব্যাংক ব্যালেন্স ৬ লাখ ৮০ হাজার রুপি। আমার চেয়ে আমার পিয়নেরও বেশি অর্থ আছে। ২০ বছর পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে কি এটাই আমার জন্য উপহার!
তিনি বলেন, যে নারী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন তার ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। তার বিরুদ্ধে পুলিশি দুটি মামলা আছে। ওদিকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছেন, এই অভিযোগ দেখে মনে হচ্ছে এটা ব্লাকমেইলের একটি টেকনিক। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বিশেষ বেঞ্চ কোনো রায় দেয়া থেকে বিরত থাকেন। তারা এ বিষয়টিতে মিডিয়াকে বিচক্ষণতা প্রদর্শন ও দায়িত্বশীলের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিচারপতি মিশ্র বলেছেন, এমন বিবেকবর্জিত অভিযোগ বিচারবিভাগের প্রতি মানুষের আস্থাকে দুর্বল করে দেবে। এক্ষেত্রে পরবর্তী রায় দেয়া হবে পরে।