শিরোনাম পড়ে নিশ্চয়ই চমকে উঠলেন! বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে তার নাম নেই। অথচ তিনি কিনা খেলবেন বিশ্বকাপ! ভাবছেন, সেটা আবার হয় নাকি। আবার ভাবতে পারেন, জাতীয় দলে সুযোগ না পেয়ে অন্য দেশের হয়ে তাহলে কি ইমরুল অংশ নিবেন? না, এসব কিছুই নয়। তবে অনেক অপ্রতাশিত ঘটনা সবই ঘটে ইমরুল কায়েসের ক্ষেত্রে।
মাসের পর মাস অনেকে খারাপ খেলেও জাতীয় দলে টিকে যান। কিন্তু ইমরুল মাঠে কেমন খেলেন সেটা বিষয় নয়। অন্যদের চরম ব্যর্থতা ঢাকতে কিংবা কেউ ইনজুরিতে পড়লে ডাক পড়ে ইমরুলের।
আবার সেই খেলোয়াড়রা একটু-আধটু রান পেলেই ইমরুলের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়।
এই ধরুন, এশিয়া বিশ্বকাপের কথা। যখন তামিমের ইকবালের অনুপস্থিতে দুই ওপেনার লিটন দাস ও নাজমুল ধারাবাহিক ব্যর্থ হচ্ছিলেন তখন ডাক পড়ে ইমরুলের। দীর্ঘ সফরের ক্লান্তি ও বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেই সেদিন তাকে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়। তাও আবার নিজের পরিচিত জায়গায় নয়, একেবারে ৬ নম্বরে। অবশ্য আস্থার প্রতিদান দিতে বেশি সময় নেননি এই অভিজ্ঞ ওপেনার। সেদিন সিরিজে টিকে থাকতে জয়ের দরকার ছিল বাংলাদেশের। শেষ দিকে নেমে ইমরুলের সেদিনের অর্ধশত রানটি না হলে ফাইনাল খেলা হতো না টাইগাদের। পরের সিরিজে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ে সফরে কি দুর্দান্তই না খেললেন ইমরুল। তিন ম্যাচের সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি ও আরেকটি সেঞ্চুরি ছুঁই ছুঁই ইনিংস। তারপরও পরের সিরিজে খারাপ করায় বাদ ইমরুল। অন্যরা যেখানে একের পর এক ম্যাচ খারাপ করেও সিরিজের পর সিরিজ দলের বোঝা হয়ে বেড়ান, সেখানে এমন দুর্দন্ত একটা সিরিজের পরের সিরিজে খারাপ খেলায় আর সুযোগ দেওয়া হলো অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের।
আবার ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের কথায় ধরুন। চূড়ান্ত স্কোয়াডে তার নাম রাখেননি নির্বাচকরা। কিন্তু ওপেনার এনামুল হক বিজয় ইনজুরিতে পড়ার পর ডাক পড়ে ইমরুল কায়েসের। তাই এবারও যে তিনি বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন না এটা এখনই বলা যাবে। আর বলা যাবে না এই কারণে যে, নামটা ইমরুল কায়েস বলে। আর এটা জানেন বলেই একটা ব্যাগ সব সময় গুছিয়ে রাখেন এই ওপেনার।
বরাবরই জাতীয় দলে যেন বলির পাঠা ইমরুল কায়েস। ১০ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে দল থেকে বাদ পড়েছেন অসংখ্য বার। পারফর্ম করলেও যে কোনো কারণে বাদ পড়ার জন্যই প্রস্তুত থাকেন তিনি। এই যেমন বিশ্বকাপ থেকে তাকে বাদ দেওয়া কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ফর্ম কিংবা ফিটনেস নয়, ইমরুলকে নেয়া হয়নি ওপেনিংয়ে ডানহাতি-বামহাতি কম্বিনেশন ঠিক রাখার জন্যই। ‘
তবে, ইমরুল যে আশা ছাড়েননি সেটা বলে দেওয়ায় যায়। এক্ষেত্রে তার আগের একটি বক্তব্য সেটাই বলে। নিউজিল্যান্ড সিরিজে দলে যায়গা না পাওয়ায় ক্ষোভ আর কষ্টে জানিয়েছিলেন দলের প্রয়োজন না হলে ক্রিকেট থেকেই বিদায় নিবেন। একই সঙ্গে যে কোনো সময় ডাক আসতে পারে এমন প্রস্তুতিও সব সময় থাকে বলেও জানান তিনি।
ইমরুল সে সময় বলেন, ‘ব্যাগ তো গোছানোই আছে। একটা সুটকেস বাংলাদেশ দলের জন্য আলাদা করা থাকে। আমি যদি বাসায় না থাকি তাহলে আমার বাসার কেয়ারটেকারও ওইটা পাঠিয়ে দিতে পারবে। সেভাবেই রেডি রাখি। ’ বোঝায় যাচ্ছে ইমরুলের কষ্টটা কোথায়। এখন দেখার বিষয়- বড় বড় কয়েকটি টুর্নামেন্টের মতো এবারও ইমরুলের ডাক পড়ে কিনা।