গাইবান্ধা: চলতি মৌসুমে গাইবান্ধায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু তার পরও ভুট্টা চাষীর মুখে হাসি নেই। বাজারে ভুট্টা বিক্রয় করে উৎপাদন খরচই উঠছেনা। সরকার ভুট্টা ক্রয় ও বাজার মুল্য নির্ধারণ না করায় কৃষকরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মী হয়ে পরেছেন। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে কৃষকরা।
গাইবান্ধা জেলায় চলতি মৌসুমে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রা ৮ হাজার হেক্টর থাকলেও প্রায় ৯ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেন কৃষকরা। ৭টি উপজেলার মধ্যে বিশেষ করে চারটি উপজেলা গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি, সাঘাটা এবং সুন্দরগঞ্জ এর চর এলাকায় ভুট্টার ব্যাপক চাষ হয়। চরের প্রতিকূল পরিবেশে কষ্ট করে ভুট্টার চাষ করে বাজার মূল্য নির্ধারিত না থাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছেন কৃষকরা।
কৃষকরা বলেন, এক বিঘা জমিতে ভুট্টা উৎপাদন হয় ৩০ মণ। যাতে খরচ হয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা, বর্তমান বাজার মূল্য ৬০০ থেকে ৬৪০ টাকা দরে ৩০ মণ ভুট্টা বিক্রয় হয় ১৭ হাজার থেকে ১৮ টাকা। এই ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লাভে সন্তুষ্ট নন কৃষকরা। তাদের দাবী বাজার মুল্য ৭ থেকে ৮ শত টাকা মাঝে থাকলে লাভের পরিমাণ ভাল হবে।
গত বছর ৮০০ টাকা বিক্রয় করে লাভের মুখ দেখেন কৃষক জব্বার। কিন্তু এ বছর ৬০০ টাকা বাজারে তার খরচের টাকা উঠাতে পারবেন বলে তিনি জানান। বাজার মূল্য কম থাকার জন্য দায়ী করলেন স্থানীয় মহাজনদের। তিনি অভিযোগ করেন বর্তমানে তারা কম দামে ভুট্টা কিনে কদিন পরে তা বেশি দামে বিক্রয় করেন, সবই মহাজনদের কারসাজি।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ পরিচারক মীর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই ভুট্টা মারাই মৌসুমে ভুট্টার দাম কম থাকায় কৃষকরা কাঙ্খিত মূল্য পাচ্ছে না। তবে কৃষকরা যদি ১ থেকে ২ মাস ফসল ঘরে রেখে যদি তারা বিক্রয় করেন তাহলে তারা অবশ্যই বর্তমান বাজারের চেয়ে অনেক বেশী দাম পাবেন।
ধান চালের মত ভুট্টার সরকারী বাজার দর নির্ধারিত না থাকার কারন জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল আলম বলেন, এখন পর্যন্ত সরাকারী উদ্যগে ভুট্টা ক্রয় করার কোন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। এ কারণে সরকার কোন মূল্যও নির্ধারণ করে নি। এছাড়াও ভুট্টা সংরক্ষণ করার মত কোন ব্যবস্থাও সরকারী খাদ্য গুদামগুলোতে নেই বলে তিনি উলে¬খ করেন। তবে মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগকে অনুমতি দিলে তারা ভুট্টা ক্রয় শুরু করবেন। এর ফলে কৃষকরা আর্থকি ভাবে লাভবাণ হবে বলে তিনি মনে করেন।
তবে কৃষকদের পক্ষ থেকে দাবী জানানো হয়েছে ভুট্টার সরকার কর্তৃক বাজার মূল্য ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা নির্ধারণ করে খাদ্য গুদামে সরকারি উদ্যোগে ভুট্টা ক্রয় শুরু হলে তারা ভুট্টা চাষ করে লাভবান হবেন এবং জেলায় ভুট্টার উৎপাদন উলে-খযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।