বরিশাল: রুপাতলী হাউজিং এলাকায় এক ছাত্রীকে আটক রেখে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে আশরাফুন্নেছা হাফিজিয়া বালিকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও বাবুর্চিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় গতকাল আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক মো. শামিম আহম্মেদ তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জেল হাজতে প্রেরণকৃত আসামিরা হল, আশরাফুন্নেছা হাফিজিয়া বালিকা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এটিএম আনোয়ার হোসেন, হেফজ শিক্ষক সানজিদা বিনতে কামাল ও বাবুর্চি নাজমা আক্তার মিলি।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, রুপাতলী ২৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী নিলুফা আক্তার ওই মাদ্রাসায় বাবুর্চির কাজ করে আসছিলো। একইসঙ্গে তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা (১৪) ওই মাদ্রাসায় হেফজ পাস করার পরে বর্তমানে সাগরদী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেণীতে পড়ে।
এদিকে ওই ছাত্রীর মা নিলুফা আক্তার মাদ্রাসার বাবুর্চির চাকুরি করাকালীন হেফজ শিক্ষক সানজিদা বিনতে কামালের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়া বিভিন্ন সময় তর্কবিতর্ক হতো। এছাড়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সঙ্গেও বিভিন্ন সময় কথা কাটাকাটি হয়।
এরপর বাবুর্চির চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পরেও আসামিরা নিলুফা আক্তার ও তার মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকার ওপর শত্রুতা পোষণ করে আসছিলো। গত ১২ই এপ্রিল মাদ্রাসার বর্তমান বাবুর্চি নাজমা আক্তার মিলি আয়েশা সিদ্দিকাকে মাদ্রাসায় ডেকে নেয়।
এ সময় তার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয় যে, আয়েশা গত ৫ মাস পুর্বে মাদ্রসার এক শিক্ষককে ঘুমের অসুধ খাওয়ায়। এই অপবাদে রাতভর ওই ছাত্রীকে আসামিরা তাদের মাদ্রসায় আটক করে রাখে। পরদিন সকালে মেয়েকে ছাড়িয়ে আনার জন্য বাবা দেলোয়ার হোসেন মাদ্রাসায় গেলে তাকে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ওইদিন সকাল ১০টার দিকে ছাত্রীকে মাদ্রাসার তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে আটক করে শারিরিক নির্যাতন করে। পরে খবর পেয়ে ছাত্রীর মা সেখানে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় মেয়েকে বাসায় নিয়ে যায়।
পরদিন ওই ছাত্রী আরো অসুস্থ্য হয়ে পরলে সকালে তাকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীটির মা নিলূফা আক্তার বাদি হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় অভিযোগ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, হেফজ শিক্ষক ও বাবুর্চিকে আটক করে গতকাল মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।